মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ মানুষ

সন্ধ্যার পর ঝাঁকে ঝাঁকে মশা বাসাবাড়িতে ঢুকছে। মশার উৎপাতে স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে।

কিশোরগঞ্জ পৌরসভার বাসিন্দারা মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ। দিনে ও রাতে সমানতালে মশা মানুষকে কামড়াচ্ছে। করোনা মহামারির আতঙ্কের সঙ্গে স্থানীয় ব্যক্তিরা ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন। এ পরিস্থিতিতে পৌরসভার বাসিন্দারা মশকনিধনের জন্য ওষুধ ছিটানো ও মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার দাবি জানিয়েছেন।

কিশোরগঞ্জ পৌরসভার শোলাকিয়া, খরমপট্টি, উকিলপাড়া, আলোরমেলা, গাইটাল, হারুয়া, নগুয়া, বত্রিশ ও নিউটাউনের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক দিন সন্ধ্যা না নামতেই ঝাঁকে ঝাঁকে মশা বাসাবাড়িতে ঢুকছে। দরজা-জানালা বন্ধ করেও রেহাই নেই। মশার যন্ত্রণায় অনেকের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। মশারি টানানোর পাশাপাশি কয়েল জ্বালিয়েও মশার উপদ্রব কমানো যাচ্ছে না। দিনের বেলায়ও কোনো কোনো জায়গায় মশার যন্ত্রণায় দাঁড়িয়ে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।

ইলিয়াস আজিজসহ কয়েকজন পৌর বাসিন্দা জানান, পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার নালা, ঝোপঝাড়, আবর্জনার স্তূপ নিয়মিত পরিষ্কার না করায় মশা ব্যাপকভাবে প্রজনন করছে। এসব স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ যদি মশকনিধনের ওষুধ ছিটাতো তাহলে মশার বংশবিস্তার কিছুটা হলেও রোধ করা সম্ভব হতো। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ সেই উদ্যোগ না নেওয়ায় মশা জন্ম নিচ্ছে। এতে মশাবাহিত নানা রোগও ছড়িয়ে পড়ছে।

এ বিষয়ে পৌরসভার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, দিন নেই, রাত নেই সব সময়ই মশার যন্ত্রণায় অস্থির তাঁরা। মশার উৎপাতে সন্তানেরা সন্ধ্যায় ঘরে পড়াশোনা করতে পারে না। মশার কারণে তাঁদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে।

কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন মো. মুজিবুর রহমান বলেন, মশার কামড়ে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে। মশার বংশবিস্তার বন্ধ করার জন্য বাসাবাড়ির আঙিনা পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এ ছাড়া বাসা ও রাস্তার পাশের গর্ত, ফুলের টব, ডাবের খোসা, এসি বা ফ্রিজে যেন পানি জমা না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হবে।

মশকনিধনে পৌরসভা কোনো উদ্যোগ নিয়েছে কি না, তা জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ পৌরসভার সচিব হাসান জাকির প্রথম আলোকে বলেন, প্রতি বছরের বাজেটে মশকনিধনের জন্য টাকা বরাদ্দ থাকে। সেই বরাদ্দ থেকে তাঁরা চেষ্টা করেন মশার ওষুধ ছিটাতে। এবারও করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকে পবিত্র রমজানের আগের দিন পর্যন্ত মশার ওষুধ ছিটানো হয়েছে। তবে পবিত্র রমজানে মশার ওষুধ ছিটানোর মেশিনের ধোঁয়ায় সমস্যা হতে পারে। এ কারণে আপাতত ওষুধ ছিটানো বন্ধ রয়েছে।