‘মহারাজের’ দায়িত্ব পেলেন শিক্ষক দম্পতি

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্সদের কোলে মহারাজ
প্রথম আলো

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতক ‘মহারাজের’ দায়িত্ব পেয়েছেন শিক্ষক দম্পতি। সোমবার সাতক্ষীরা শিশু আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এ নির্দেশ দেন। পাশাপাশি শিগগিরই শিশুটিকে ওই দম্পতির হাতে তুলে দেওয়ার জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মহারাজকে দত্তক নেওয়া ওই শিক্ষক দম্পতি হলেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার রাঢ়ীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিখা রানী চৌধুরী ও যশোরের সাগরদাঁড়ি কারিগরি ও বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়ের ব্যবহারিক শিক্ষক বরুণ কুমার পাল। এ–সংক্রান্ত চিঠি ইতিমধ্যে তাঁদের কাছে পৌঁছেছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ৪ অক্টোবর কালীগঞ্জের গোলখালি শ্মশানের পাশে কে বা কারা সদ্য ভূমিষ্ঠ একটি ছেলেশিশু একটি থলের মধ্যে করে রেখে যান। স্থানীয় লোকজন দেখতে পেয়ে শিশুটিকে প্রথমে ক্লিনিক ও পরে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তিনি আরও জানান, হাসপাতালের কর্মচারী মর্জিনা খাতুনের ওপর শিশুটিকে দেখভাল করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি শিশুটির নাম রাখেন মহারাজ।

কালীগঞ্জের ইউএনও মোজ্জামেল হকের নেতৃত্বে গঠিত শিশুকল্যাণ বোর্ড শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য আবেদন আহ্বান করেন। শিশুটিকে দত্তক পেতে ২৯টি আবেদন জমা পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও বিদ্যালয়শিক্ষক থেকে শুরু করে পুলিশ কর্মকর্তা, প্রশাসনের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ মহারাজকে নিতে আবেদন করেন। এসব আবেদন শিশুকল্যাণ বোর্ড সাতক্ষীরা শিশু আদালতে পাঠায়।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা সুমনা শারমিন জানান, আদালত সোমবার এক আদেশে শিশু মহারাজকে শিক্ষক শিখা রানী চৌধুরী ও তাঁর স্বামী বরুণ কুমার পাল দম্পতির হাতে দত্তক হিসেবে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা শেখ তৈয়েবুর রহমান জানান, শিশুটি বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সুস্থ ও ভালো আছে। তাকে মর্জিনা খাতুন নামের এক কর্মচারী দেখভাল করছেন।

এদিকে গত ১৬ সেপ্টেম্বর কালীগঞ্জে অবিবাহিত এক মানসিক প্রতিবন্ধী একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেন। একই আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান ওই শিশুটিকে শ্যামনগর উপজেলার বড়কুপুট গ্রামের শিক্ষক জি এম মাসুম কবীর ও হোসনে আরা দম্পতিকে দেওয়ার নির্দেশ দেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার দপ্তর থেকে শিশুটিকে তাঁদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।