মাগুরার ঐতিহ্যবাহী মেলা নিয়ে সংশয়
প্রতিবছর পৌষের ২৮ তারিখ মাগুরা সদর উপজেলার বাহারবাগ এবং মহম্মদপুর উপজেলার বড়রিয়া গ্রামে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এই ঘোড়দৌড় ঘিরে চলে গ্রামীণ মেলা। তবে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় এবার মেলার অনুমতি নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা প্রশাসন বলছে, মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে এরই মধ্যে দুই উপজেলায় মেলা বসেছে। দূরদূরান্ত থেকে এসে মেলায় পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। প্রস্তুতি রয়েছে ঘোড়দৌড় আয়োজনেরও। তবে মহম্মদপুর উপজেলার বড়রিয়া গ্রামের মেলার আয়োজকদের দাবি, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক দিনের জন্য মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
দুই মেলার আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে মেলা দুটি আয়োজিত হয়ে আসছে। যেখানে মূল আকর্ষণ ঘোড়দৌড়। তবে ঘোড়দৌড়ের আগে ও পরে এক সপ্তাহ করে মেলা চলে। আগামীকাল বুধবার দুই মেলাতেই ঘোড়দৌড় আয়োজনের কথা রয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বড়রিয়া গ্রামের মেলায় গিয়ে দেখা যায়, ইতিমধ্যে সেখানে কয়েক শ দোকানে শিশুদের খেলনা, কাপড়চোপড়, মিষ্টি থেকে শুরু করে আসবাব বেচাকেনা চলছে। মেলায় মানুষের সমাগমও চোখে পড়ার মতো।
জানতে চাইলে বড়রিয়া মেলার আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সরদার প্রথম আলোকে বলেন, এই মেলায় ২০০ থেকে ৩০০ দোকান বসে। আর এই মেলা ঘিরে পুরো উপজেলায় উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। কিন্তু করোনার কারণে এবার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক দিনের জন্য মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সদর উপজেলার বাহারবাগ মেলা চত্বরে চার থেকে পাঁচ দিন আগে থেকেই দোকান বসিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আয়োজক কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘শত বছর ধরে এই মেলা হয়ে আসছে। এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে দূরদূরান্ত থেকে মেলা দেখার জন্য আত্মীয়স্বজনেরা এসেছেন। এখানে কাউকে ডেকে আনতে হয় না। ব্যবসায়ীরা নিজে থেকে এসেই দোকান বসান। রাতে জারিগানের আয়োজন থাকে। কিন্তু এবার অনুমতি মেলেনি। এখন আমরা কাউকে তাড়িয়েও দিতে পারছি না, আবার ইচ্ছামতো উৎসবও করতে পারছি না।’
জানতে চাইলে মাগুরার জেলা প্রশাসক আশরাফুল আলম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মেলা দুটি মাগুরার ঐতিহ্য। তবে মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কিন্তু সরকারিভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই। জনস্বাস্থ্যের বিষয়ে জেলা প্রশাসন কোনো ঝুঁকি নিতে পারবে না।