মাঝি বাইয়া যাও রে গানের সুরে পদ্মায় ভাসল ২৫ নৌকা
ঘড়িতে বেলা ১টা বেজে ২৮ মিনিট। মাইকে বেজে উঠল ‘মাঝি বাইয়া যাও রে...’ গানটি। সঙ্গে ২৫টি নৌকার মাঝি বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত পাল উড়িয়ে পদ্মায় ভাসাল নৌকা। আজ মঙ্গলবার এভাবেই রাজশাহীর টি-বাঁধে ২৫ জন মাঝিকে নৌকা উপহার দেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তার আগে এক অনুষ্ঠানে তাঁদের হাতে বইঠা তুলে দেন অতিথিরা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ‘মুজিব বর্ষ’ উদ্যাপন উপলক্ষে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও ইছামতী নদীপারের প্রান্তিক ১০০ জন জেলেকে ১০০টি নৌকা দিচ্ছে বিজিবি। শত নৌকায় জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনের অংশ হিসেবে আজ রাজশাহীতে পদ্মা নদীর ২৫ জন মাঝিকে নৌকা দেওয়া হয়। প্রতিটি নৌকা পদ্মায় ভাসানো হয় ‘মাঝি বাইয়া যাও রে’ গানের সঙ্গে। সীমান্তের প্রান্তিক জেলেদের স্বাবলম্বী করার প্রয়াসে বিজিবির এই অনুষ্ঠান হয় রাজশাহী মহানগরের টি-বাঁধ এলাকাসংলগ্ন পদ্মা নদীর পাড়ে। অনুষ্ঠানে হতদরিদ্র ২৫ জন জেলেকে নৌকাসহ নৌকার পাল, গেঞ্জি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান ও বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম।
বর্ণিল এ আয়োজনে মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্মলালিত স্বপ্ন সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার কাজের অংশ হিসেবে রাজশাহীতে প্রান্তিক জেলেদের মধ্যে নৌকা উপহার দিয়েছে বিজিবি। মুজিব বর্ষে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণে এটি অনন্য একটি উদ্যোগ। বিজিবি যে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের কল্যাণে আন্তরিক, তা এর থেকেই প্রমাণ হলো।
বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী জাতির সূর্যসন্তানদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের গরিব, দুঃখী ও মেহনতি মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। জাতির পিতার সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সব সময় সীমান্তবর্তী হতদরিদ্র ও অসহায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় শত নৌকায় জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের আয়োজন করেছে বিজিবি। বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকীর স্মরণে ১০০টি নৌকা প্রান্তিক জেলেদের দেওয়া হলো। এ নৌকা পেয়ে সীমান্তবর্তী প্রান্তিক জেলেরা ভালোভাবে জীবিকা নির্বাহ করবেন এবং স্বাবলম্বী হয়ে অন্যদের স্বনির্ভর হওয়ার প্রেরণা জোগাবেন।
বিজিবির মহাপরিচালক আরও বলেন, এই ১০০টি নৌকার শুধু ১০০ জন জেলেকেই নয়, বরং ১০০টি পরিবার ও পরিবারের সদস্যদেরও নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখাবে। সীমান্তের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যতই স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে, সীমান্তসংক্রান্ত অপরাধ ও চোরাচালান ততই হ্রাস পাবে।