মাটির ব্যাংকের টাকা নিয়ে দুর্গতদের পাশে শিশুরা

পিরোজপুরের মিনা শিশু নিকেতনের পাঁচ শিক্ষার্থী মাটির ব্যাংকে জমানো টাকা করোনা দুর্গতদের সাহায্যের জন্য জেলা প্রশাসকের হাতে তুলে দেয়। আজ সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। ছবি: প্রথম আলো
পিরোজপুরের মিনা শিশু নিকেতনের পাঁচ শিক্ষার্থী মাটির ব্যাংকে জমানো টাকা করোনা দুর্গতদের সাহায্যের জন্য জেলা প্রশাসকের হাতে তুলে দেয়। আজ সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। ছবি: প্রথম আলো

মাটির ব্যাংকে পাঁচ শিশু এক বছর ধরে সঞ্চয় করেছিল কিছু টাকা। জমানো সেই টাকাসহ মাটির ব্যাংকগুলো করোনা দুর্গত মানুষের সহায়তার জন্য তুলে দিল জেলা প্রশাসকের হাতে। আজ সোমবার দুপুরে পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেনের কাছে মাটির ব্যাংকগুলো তুলে দেয় স্থানীয় মিনা শিশু নিকেতনের পাঁচ শিক্ষার্থী।

এই পাঁচ শিক্ষার্থী হলো মারশাফি, শামিম, রেজবি, মুক্তা ও সিনথিয়া। ব্যাংকগুলো ভেঙে দেখা যায়, তাদের দেওয়া টাকার পরিমাণ ১ হাজার ৪২২ টাকা।

মিনা শিশু নিকেতনের অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম বলেন, ২০১৭ সালে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের টাকা সঞ্চয়ের জন্য মাটির তৈরি ব্যাংক উপহার দেওয়া হয়। ব্যাংকে শিশুরা টিফিনের টাকা থেকে কিছু টাকা সঞ্চয় করে। ২০১৭ সালের ২৭ আগস্ট আট শিশু বন্যার্তদের জন্য ১ হাজার ৭৫০ টাকা জেলা প্রশাসকের কাছে তুলে দিয়েছিল। ২০১৯ সালের পয়লা বৈশাখ বিদ্যালয়ের ১২৬ শিশুকে টাকা সঞ্চয়ের জন্য মাটির ব্যাংক দেওয়া হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা দুর্গত মানুষের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে সহায়তা চাইলে পাঁচ শিশু তাদের মাটির ব্যাংকে জমানো টাকা দেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। শিশুদের ১ হাজার ৪২২ টাকার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আলাউদ্দিন মিনার দেওয়া পাঁচ হাজার টাকা এবং শিক্ষকদের দেওয়া ৯ হাজার ১০০ টাকা জেলা প্রশাসকের কাছে তুলে দেওয়া হয়।

বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র মারশাফি বলে, 'বিদ্যালয় থেকে মাটির ব্যাংক উপহার দিয়ে স্যার বলেছিলেন এতে টিফিনের টাকা থেকে কিছু টাকা সঞ্চয় করার জন্য। আমি প্রায়ই এক, দুই টাকা করে ব্যাংকে জমিয়েছি। শুনেছি অনেক মানুষ কষ্টে আছে। ঠিকমতো খেতে পারে না। ওই মানুষদের জন্য আমার জমানো টাকা দিয়েছি।'

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, 'দেশের দুর্যোগে অসহায় মানুষের জন্য শিশুদের সহায়তা পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ছোট সোনামনিদের এ দান অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।'