মাদক কারবারিদের নতুন তালিকা করা হবে

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন মঙ্গলবার কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
প্রথম আলো

মাদক কারবারিদের নতুন তালিকা করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় কক্সবাজার সদর মডেল থানা পরিদর্শন এসে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। নতুন ডিআইজি হিসেবে কক্সবাজারে এটি তাঁর দ্বিতীয় সফর।

কক্সবাজারে সফরের বিষয় এবং একসঙ্গে জেলা পুলিশের সবাইকে বদলির ঘটনা তুলে ধরে ডিআইজি  বলেন,  এসপি থেকে শুরু করে কনস্টেবল পর্যন্ত সবাইকে কয়েক দফায় বদলি করা হয়েছে। অবশ্যই এটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা। এখন কক্সবাজারের কনস্টেবল থেকে এসপি পর্যন্ত সবাই নতুন। নতুনভাবে যাঁরা যোগদান করেছেন তাঁদের মনোবল বৃদ্ধি এবং পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে উৎসাহ দিতে তিনি  কক্সবাজার সফরে এসেছেন।  শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশের যে ভূমিকা আছে, সেটি পেশাদারির সঙ্গে পালন করবে পুলিশ।

১৬ ডিসেম্বরের আগে কক্সবাজারকে মাদকমুক্ত  করা হবে, আগের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেনের  ঘোষণা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি আনোয়ার হোসেন  বলেন, ‘জেলা সুপার পুলিশ কী বলেছিলেন এই মুহূর্তে আমার জানা নেই। নতুন পুলিশ সুপার এসেছেন, তিনি নিশ্চয়ই সার্বিক পরিস্থিতি বিচার-বিশ্লেষণ করে লক্ষ্য ঠিক করবেন। মাদকবিরোধী অভিযান চলমান থাকবে।’ ডিআইজি আরও বলেন, মাদক নির্মূলে টাস্কফোর্স আছে। টাস্কফোর্সের সদস্যদের সঙ্গে মিটিং করা হবে। নতুন পুলিশ সুপার সবকিছু বিবেচনা করে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন।

ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার দায়িত্ব পালনের সময় কোনো কর্মকর্তা ঘুরেফিরে এক জায়গায় থাকার ট্রেডিশন থাকবে না। তবে চাকরি করতে এসে এক থানার পাশের থানায় চাকরি করতে পারবে না, এমন নিষেধ নেই, আইনের লঙ্ঘন হওয়ার মতোও বিষয় নয়। যেহেতু বিষয়টা আলোচনা-সমালোচনায় এসেছে, নিশ্চয় আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে। তাই ঘুরেফিরে দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হবে না কাউকে।’
এ সময় ডিআইজি আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নতুন পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীরুল গীয়াস।

পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান বলেন, থানা নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের জায়গা। এখানে কোনো দালাল-টাউটকে ঘেঁষতে দেওয়া হবে না। দালালেরা বিন্দু পরিমাণ ছাড় পাবে না।

গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় টেকনাফ মডেল থানার ওসি  প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ পুলিশের সাত সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বর্তমানে ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ পুলিশের সাত সদস্য সিনহা হত্যা মামলার আসামি হিসেবে কারাগারে আছেন। সিনহা হত্যার ঘটনায়  পুলিশের বিরুদ্ধে নানা সমালোচনা ও প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় বিভিন্ন মহলে। এরপর জেলা পুলিশকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয় সদর দপ্তর। ওই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে চার দফায় জেলা পুলিশের এসপি থেকে শুরু করে কনস্টেবল পর্যন্ত অন্তত দেড় হাজার সদস্যকে দেশের বিভিন্ন রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে। এর আগে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজিকেও বদলি করা হয়।