মাদ্রাসাছাত্রী হত্যা মামলায় কিশোরের ৫ বছরের কারাদণ্ড

প্রতীকী ছবি

বাগেরহাটের আলোচিত শিশু হীরা আক্তার (১১) হত্যা মামলায় এক কিশোরকে (১৩) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. নূরে আলম এই রায় দেন। দণ্ডিত কিশোর হওয়ায় তাকে জেলখানায় না পাঠিয়ে পাঁচ বছর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আটক রাখার আদেশ দেন আদালত।

নিহত হীরা আক্তার (১১) বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বহরবুনিয়া গ্রামের দিনমজুর মো. গাউস শেখের মেয়ে। সে স্থানীয় ছাপড়াখালী গাজীরঘাট দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২ জুলাই বিকেলে পরিবারের সদস্যদের অনুপস্থিতিতে হীরাদের বাড়িতে ঢুকে তাকে হত্যা করা হয়। এরপর সারা শরীরে লিপস্টিক লাগিয়ে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে বিবস্ত্র করে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনায় নিহত হীরার মা নাছিমা বেগম বাদী হয়ে ওই দিন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। ঘটনার পর পুলিশ ১৪ জুলাই প্রতিবেশী এক দম্পতি ও তাঁদের নাতিকে গ্রেপ্তার করে।

রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) রনজিৎ কুমার মণ্ডল জানান, শিশু আইন ২০১৩ সালের ৩৩ ধারা আনুযায়ী অন্য কোনো আইনে ভিন্নরূপ যা কিছু থাকুক কোনো শিশুকে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা যাবে না। দোষী প্রমাণিত হলেও তাকে ১০ বছরের বেশি আটকাদেশ দেওয়া যাবে না। যে অনুযায়ী অভিযোগ প্রমাণিত হলেও আদালত কিশোরটিকে ওই দণ্ড দিয়েছেন। তবে হত্যার মামলায় অভিযুক্ত ওই কিশোরের দাদা (৭৫) ও দাদির (৬০) বিচার জেলা জজ আদালতে হবে। ওই আদালতে তাঁদের বিচারকাজ চলমান।

গত বছরের ১৮ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোরেলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ঠাকুর দাস মণ্ডল আদালতে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২৫ নভেম্বর বিচারের জন্য মামলাটি নারী ও শিশু আদালতে প্রেরণ করা হয়। মামলায় ১০ জন সাক্ষী, চিকিৎসক, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ মোট ২১ জনের সাক্ষ্য এবং বাদী ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করা হয়।

তবে রায়ে খুশি নন মামলার বাদী। হীরার মা নাসিমা বেগম বলেন, ‘এমন নির্মম হত্যার পর মাত্র পাঁচ বছরের সাজা মেনে নিতে পারছি না। অন্য দুই আসামিও এখন জামিনে। আমরা কঠোর শাস্তি চাই।’