মানব পাচার মামলায় ২ জনের ৭ বছর কারাদণ্ড

বরিশালে মানব পাচার মামলায় দুজনকে সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। বরিশাল মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মঞ্জুরুল হোসেন আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এই রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন বরিশালের মুলাদী উপজেলার কাজীরচর এলাকার আবদুল জলিল সরদার ও ঢাকার বনানীর একটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক আনিসুর রহমান। খালাস পাওয়া দুজন হলেন দণ্ডিত জলিল সরদারের দুই স্ত্রী রাশিদা আক্তার ও জেসমিন আক্তার।

আদালত ও মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে বরিশালের মুলাদীর কাজীরচর এলাকার আবদুল জলিল পাশের খালাসীর চর এলাকার আবুল কালাম ওরফে মিজানুর রহমানকে পাঁচ লাখ টাকার চুক্তিতে লিবিয়া পাঠানোর কথা বলে সুদানে পাঠিয়ে দেন। সেখানে পৌঁছে বাংলাদেশিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৬৫ জনকে বিপদগ্রস্ত অবস্থায় দেখতে পান আবুল কালাম। সেখান থেকে ট্রাকে করে সাত দিন ও সাত রাত অবৈধভাবে তাঁকেসহ অন্যদের লিবিয়া পাঠানো হয়। লিবিয়া পৌঁছার পর দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করা হয় আবুল কালামের পরিবারের কাছ থেকে। পরে ছেড়ে দেওয়া হলে লিবিয়া পুলিশ আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করে। একপর্যায়ে লিবিয়ায় কর্মরত বরিশালের মুলাদী উপজেলার আবদুল বারেক খান নামের এক ব্যক্তি তাঁকে পুলিশি হেফাজত থেকে মুক্ত করে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

দেশে ফিরে ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর চারজনকে আসামি করে বরিশাল আদালতে একটি মামলা করেন আবুল কালাম। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের জন্য মুলাদী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর মুলাদী থানার উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন খান চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মামলাটি বরিশাল মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ ওই রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল। বাদীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন কাইয়ুম খান কায়সার ও আসামিপক্ষের ছিলেন হুমায়ুন কবির। এ নিয়ে বরিশাল মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে অবৈধ মানব পাচারের তিনটি মামলার রায় ঘোষণা হলো।