মানিকগঞ্জে বিএনপি নেতার গাড়িবহরে হামলা, আহত ৭

মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় শুক্রবার বিকেলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে সাতটি ব্যক্তিগত গাড়ি ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়
ছবি: প্রথম আলো

দলীয় এক নেতার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী থেকে ফেরার পথে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীরের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। এতে বিএনপির সাত নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার বিকেলে উপজেলার জৈন্তা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ওই হামলার সময় বেশ কয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে জেলা বিএনপির এক বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়েছে।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় জানা গেছে। তাঁরা হলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হামিদুর রহমান, মানিকগঞ্জ পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শহীদুল ইসলাম ও জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি ওমর ফারুক। তাঁদের মধ্যে শহীদুল ও ওমরকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জেলা বিএনপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও দলীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলার যমুনা নদীবেষ্টিত বাচামারা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইউনুস আলী শেখের বাবার আজ মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। জেলা ও উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে এস এ জিন্নাহ কবীর ওই মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আজ দুপুরে ছয়টি ব্যক্তিগত গাড়ি, একটি মাইক্রোবাস ও অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেলে ইউনুস আলীর বাড়িতে যান। দুর্গম চরাঞ্চলে যাতায়াতের সড়ক না থাকায় ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটরসাইকেল জৈন্তা বাজারে রেখে নেতা-কর্মীরা সেখানে যান। পরে বিকেল চারটার দিকে ফেরার পথে জৈন্তা বাজারে আসার পরপরই স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪০ থেকে ৫০ জন নেতা-কর্মী দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করেন। এ সময় হামলাকারীরা ৬টি ব্যক্তিগত গাড়ি ও ২০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া বিএনপির নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি মুঠোফোন ও অর্থ লুট করে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে বিএনপির নেতা এস এ জিন্নাহ কবীর প্রথম আলোকে বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মানিকগঞ্জ-১ আসনে (ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলা) বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে আগ্রহী। এ জন্য তাঁর প্রতিপক্ষের লোকজন ঈর্ষান্বিত হয়ে এ হামলা করেন। তিনি বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির ওরফে শাওনের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। নেতা-কর্মীদের চিকিৎসার ব্যস্ততা থাকায় এ ঘটনায় আগামীকাল (শনিবার) মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।

তবে বিএনপি নেতার গাড়িবহরে হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘হামলার ঘটনায় আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। বিএনপি নেতাদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এ ঘটনা ঘটেছে।’

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকারিয়া হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি শুনেছেন। তবে এ বিষয়ে কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’