মামলা না তোলায় তত্ত্বাবধায়ককে বের করে দিয়ে বাড়িতে তালা

তালা দেওয়া বাড়ির ফটকে দাঁড়িয়ে আছেন এর তত্ত্বাবধায়ক সামসুল হক। আজ শনিবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

নাটোরের গুরুদাসপুরে সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তার বাড়ির তত্ত্বাবধায়ককে পরিবারসহ বের করে দিয়ে ঘর ও ফটকে তালা ঝুলানোর অভিযোগ উঠেছে লিটন খলিফা নামের এক যুবক ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের মামুদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি স্বীকার করেছেন লিটন খলিফা। তিনি মামুদপুর গ্রামের বাসিন্দা।

ওই বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক সামসুল হক বলেন, খেতের ফসল ও বরইগাছ কাটার একটি মামলা তুলে না নেওয়ায় এ ঘটনা ঘটিয়েছেন লিটন ও তাঁর লোকজন। এ ব্যাপারে গতকাল রাতে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।

আজ শনিবার পর্যন্ত পরিবার নিয়ে সামসুল হক পাশের একটি বাড়িতে আছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে তালা খুলে দেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সামসুল হক বলেন, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ইউসুফ আলীর বাড়িতে ৩৪ বছর ধরে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে আছেন তিনি। মূলত খেতখামার ও বাড়িটি দেখাশোনা করেন এবং পরিবার নিয়ে ওই বাড়িতেই থাকেন। বাড়ির মালিক ইউসুফ আলী অসুস্থ হয়ে কয়েক বছর ধরে রাজশাহীতে তাঁর মেয়ের বাড়িতে থাকেন। এ সুযোগে লিটন খলিফা বিভিন্ন সময় তাঁর কাছে অনৈতিক সুবিধা দাবি করে আসছিলেন। তাঁর দাবি পূরণ না করায় সম্প্রতি তিন বিঘা খেতে রোপণ করা পটোল ও ৫০টি বরইগাছ কেটে ফেলেন লিটন ও তাঁর সহযোগীরা। এ ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে নাটোর আদালতে মামলা করেন সামসুল হক। মামলাটি তুলে নিতে লিটন তাঁকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন।সর্বশেষ গতকাল দুপুরে তাঁর স্ত্রী–সন্তানদের জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে ঘরে ও মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন লিটন ও তাঁর লোকজন। বর্তমানে পরিবার নিয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে আছেন তিনি। বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানানো হয়েছে।

বাড়ির মালিক ইউসুফ আলী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্ত্রী-সন্তান মারা যাওয়ার পর থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি। এ কারণে রাজশাহীতে মেয়ের বাড়িতে আছেন। খেতখামার ও বসতবাড়িটি কেয়ারটেকার সামসুল হক দেখাশোনা করেন।

বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত লিটন খলিফা বলেন, ‘এলাকায় পরিচ্ছন্ন ইমেজের মানুষ আমি। অথচ খেতের ফসল ও বরইগাছ কাটার ঘটনায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। মামলা তুলে না নেওয়ায় ওই বাড়িতে তালা দিতে বাধ্য হয়েছি। অনৈতিক সুবিধা দাবির অভিযোগটি সত্য নয়।’

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন বলেন, অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।