সোনারগাঁয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের সমালোচনা
এ ঘটনায় ইতিমধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে দুটি এবং ক্ষতিগ্রস্ত যুবলীগ-ছাত্রলীগ ও হেফাজত কর্মীদের দ্বারা আহত স্থানীয় এক সাংবাদিক বাদী হয়ে চারটিসহ থানায় মোট ছয়টি মামলা করেছেন। দুটি মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে। এ পর্যন্ত পুলিশ ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়্যাল রিসোর্টে ৩ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে ঘেরাওয়ের ঘটনার আগে-পরে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা যাঁর যাঁর দক্ষতা ও সক্ষমতার প্রমাণ দিতে পারেননি। এ মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান।
বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান শনিবার বিকেলে মামুনুল হককে ছাড়িয়ে নিতে হেফাজত কর্মীদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সোনারগাঁ রয়্যাল রিসোর্ট, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলামে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর পরিদর্শন করেন। এরপরই উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ওই দিনের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ভূমিকার সমালোচনা করেন তিনি।
প্রশাসনের যাঁরা যাঁরা ওই ঘটনার সময় যুক্ত ছিলেন, তাঁরা তাঁদের যোগ্যতার পরিচয় দিতে পেরেছিলেন কি না এবং ওই দিন তাঁরা কে কী কাজ করেছিলেন, সেটি তদন্ত করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা অঞ্চলের পুলিশে অপরাধ বিভাগের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) জিহাদুল কবির, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ ও পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম।
ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমি আশা করেছিলাম ওই ঘটনার সময় প্রশাসনের কর্মকর্তারা যাঁর যাঁর দক্ষতা ও সক্ষমতার প্রমাণ করবেন। কিন্তু তাঁদের কথার সঙ্গে কাজের মিল খুঁজে পাচ্ছি না।’ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের যাঁরা যাঁরা ওই ঘটনার সময় যুক্ত ছিলেন, তাঁরা তাঁদের যোগ্যতার পরিচয় দিতে পেরেছিলেন কি না এবং ওই দিন তাঁরা কে কী কাজ করেছিলেন, সেটি তদন্ত করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, যাঁরা যে জায়গায় চাকরি করছেন, তাঁরা সে জায়গায় উপযুক্ত না হলে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হবে। কেউ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলে চাকরি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য তিনি নির্দেশ দেন।
রয়্যাল রিসোর্টের ঘটনার পরের দিন ৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) টি এম মোশারফ হোসেনকে পুলিশের খুলনা অঞ্চলে বদলি এবং সোনারগাঁ থানার ওসি রফিকুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।