মারধরে নারীর গর্ভপাত, ২৪ ঘণ্টায়ও মামলা হয়নি

নারী নির্যাতন
প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় স্বামীর মারধরে ইয়াসমিন আক্তার (৩০) নামের চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীর গর্ভপাত হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও কোনো মামলা হয়নি। আর্থিক অসচ্ছলতা ও মামলাসংক্রান্ত জটিলতার কারণে মামলা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্যাতনের শিকার ওই নারীর পরিবার।

অসুস্থ ইয়াসমিন বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। ইয়াসমিন সুস্থ আছেন জানিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর ছোট ভাই পোশাককর্মী আবুল হোসাইন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাবা মৃত। গার্মেন্টেসে কাজ করে বৃদ্ধা মাকে নিয়ে থাকি। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই। কিন্তু বিচার পেতে হলে মামলা করতে হবে, আইনজীবী নিয়োগ দিতে হবে। সে জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। টাকা না থাকায় মামলা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ তবে সরকারি–বেসরকারি কোনো সংস্থা ইয়াসমিনের পক্ষে মামলা লড়তে চাইলে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।

এর আগে গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের নতুন বান্টি গ্রামে স্বামী আজিজুল ইসলামের (৩৮) মারধরেরর শিকার হন চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ইয়াসমিন। আজিজুল মারধরের একপর্যায়ে ইয়াসমিনের পেটে আঘাত করলে গর্ভপাত হয় ইয়াসমিনের। পেশায় ডাইং ব্যবসায়ী আজিজুল ওই গ্রামের মো. আবদুল্লাহর ছেলে। ইয়াসমিন আক্তার একই ইউনিয়নের পাঁচরুখি এলাকার মৃত আবদুল কুদ্দুসের মেয়ে।

গতকালের ঘটনা সম্পর্কে নির্যাতনের শিকার নারীর ভাই আবুল হোসাইন বলেন, প্রায় ১৪ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ইয়াসমিনের। ইয়াসমিন ও আজিজুলের সংসারে তিন সন্তান আছে। এরই মধ্যে আজিজুল পরকীয়ায় জড়ালে প্রায়ই এ নিয়ে তাঁদের ঝগড়া হতো। ঝগড়ার জেরে মারধরের শিকার হতেন ইয়াসমিন। একই কারণে গতকাল তাঁদের মধ্যে আবার ঝগড়া শুরু হলে অন্তঃসত্ত্বা ইয়াসমিনকে মারধর ও পেটে আঘাত করেন আজিজুল। এতেই গর্ভপাত হয় ইয়াসমিনের।

আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে পুলিশ ঘটনার বর্ণনা শুনেছে। তবে কেউ অভিযোগ না করায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।