মির্জাগঞ্জে ৫ গ্রামে নেই আশ্রয়কেন্দ্র

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত উপকূল
প্রথম আলো ফাইল ছবি

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার পায়রা নদের তীরে অবস্থিত মাধবখালী ও মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামে কোনো ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নেই। ফলে ইয়াসের মতো ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এসব গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দাকে ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হয়।

গ্রামের কয়েকজন বলেন, মাধবখালী ইউনিয়নের পায়রা নদের ভাঙনকবলিত উত্তর রামপুর, আরজি দুর্গাপুর ও মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের সুন্দ্রা কালিকাপুর, ভাজনা কদমতলা ও পিঁপড়াখালী গ্রামে কোনো ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নেই। এসব গ্রাম থেকে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার দূরে আশ্রয়কেন্দ্র অবস্থিত। ফলে দুর্যোগকালে গ্রামের মানুষের এত দূর যাওয়া সম্ভব হয় না।

পূর্ব রামপুর গ্রামের বাসিন্দা নুরনেহার বেগম বলেন, ‘নদীভাঙনে বাড়িঘর সবই গ্যাছে। জানডা (জীবন) লইয়া কোনো রহম বাঁইচা আছি। ফের বইন্যা অইলে আর কী করুম।’

একই গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর আলম, এনায়েত জোমাদ্দার, মিলন মুসল্লি, ইয়াসিন জমাদ্দার ও মোয়াজ্জেম হাওলাদার জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় কাছাকাছি রামপুর সিদ্দিকীয়া ফালিজ মাদ্রাসার ভবন ও রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু এ বছর তা–ও নেই। নদীভাঙনে শেষ হয়ে গেছে।

মাধবখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনিরুল ইসলাম তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, নদীভাঙনে পূর্ব রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ও রামপুর সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসা ভবনটি বিলীন হওয়ায় এই এলাকার মানুষের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের সংকট দেখা দিয়েছে। জানমাল বাঁচাতে এসব এলাকার লোকদের কানকি রামপুর ও রামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় উপজেলায় ৫৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ফেরদৌস। তিনি বলেন, পায়রা নদতীরবর্তী প্রতিটি গ্রামে যাতে অন্তত একটি করে সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হয়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যেসব গ্রামে আশ্রয়কেন্দ্র নেই, জরুরি মুহূর্তে ঝুঁকিপূর্ণ সেই এলাকার মানুষকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।