মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর ছেলে হত্যা মামলার প্রধান আসামির রিমান্ডের আবেদন
বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার প্রধান আসামি সবুজ সেপাইকে (৩২) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার আসামিকে বরিশাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে এই রিমান্ড চেয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মমিন উদ্দিন। এদিকে অর্থের অভাবে হামলায় আহত দুই ছেলে ও এক পুত্রবধূর চিকিৎসা করাতে পারছে না পরিবারটি।
এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বানারীপাড়া উপজেলার বাইশারি ইউনিয়নের লবণসাড়া গ্রাম থেকে সবুজ সেপাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ছাড়া গত শনিবার দুপুরে উজিরপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে হত্যা মামলার অপর পাঁচ আসামি আকলিমা বেগম (৩২), সাইফুল ইসলাম (৪৫), আকতার হোসেন (৪০), সবুজ সরদার (৩৫) ও সুলতান মোল্লাকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আর্শেদ বলেন, হত্যা মামলার প্রধান আসামি সবুজ সেপাইকে গতকাল সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, জমি নিয়ে উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের আটিপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন তালুকদারের (৭২) সঙ্গে একই গ্রামের নুরুল ইসলাম (৪৫), মো. জলিল সেপাইয়ের (৫৫) বিরোধ চলে আসছিল। ২৯ জুলাই সকালে নুরুল ও জলিলের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন সন্ত্রাসী দেলোয়ার হোসেন তালুকদার, তাঁর ছেলে বিপ্লব তালুকদার (৪০), মেজ ছেলে সোহাগ তালুকদার (৩৭), ছোট ছেলে জুয়েল তালুকদার (৩৫) ও বড় পুত্রবধূ রোজিনা বেগমকে (২৮) ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেন। আহত ব্যক্তিদের বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে দেলোয়ার হোসেন মারা যান।
এ ঘটনায় জুয়েল তালুকদার বাদী হয়ে গত ৩১ জুলাই ৩২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এদিকে হামলায় আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ৭ আগস্ট মারা যান বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেনের ছেলে বিপ্লব তালুকদারও।
দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে বরিশাল বিএম কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী স্বর্ণা আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্যকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়েছে। আমার বাবা ও বড় ভাই নিহত হয়েছেন। বাকি দুই ভাই ও ভাবি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন অথচ প্রশাসন নির্বিকার। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার বাবা ও ভাইয়ের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’