মুঠোফোনের সিম বিক্রির টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বে সোনাতলার ব্যবসায়ীকে হত্যা: পিবিআই

বগুড়া জেলার মানচিত্র

মুঠোফোনের সিম বিক্রির পাওনা টাকা নিয়ে বিক্রয় প্রতিনিধির সঙ্গে বিরোধের জেরে বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার ব্যবসায়ী পারভেজ ইসলামকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পর ৮ মে গাজীপুর মহানগর এলাকা থেকে ওই বিক্রয় প্রতিনিধি মারুফুল ইসলাম ওরফে পাপ্পুকে (২৮) গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর গতকাল বুধবার বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মোমিনের আদালতে এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআইয়ের বগুড়ার পুলিশ সুপার মো. আকরামুল হোসেন।

পারভেজ ইসলাম ও মারুফুল ইসলাম দুজনের বাড়িই সোনাতলা উপজেলার ঠাকুরপাড়া গ্রামে। ২০২০ সালের ১১ এপ্রিল উপজেলার করমজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ এলাকায় খুন হন পারভেজ।

আদালতে মারুফুল ইসলামের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই কর্মকর্তা মো. আকরামুল হোসেন বলেন, পারভেজ ইসলাম সোনাতলা উপজেলায় একটি মুঠোফোন কোম্পানির সিম বিক্রির এজেন্ট ছিলেন। ওই কোম্পানিতে সিম বিক্রয় প্রতিনিধির কাজ করতেন ঠাকুরপাড়া এলাকার মাসুদ রানা। তাঁরা একসঙ্গে বিভিন্ন বাজারে সিম বিক্রি করতেন। সিম বিক্রির টাকা লেনদেন নিয়ে পারভেজ ও মাসুদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এই বিরোধ মিটমাটের জন্য মাসুদ রানার পক্ষ নিয়ে ২০২০ সালের ১১ এপ্রিল দুপুরে পারভেজ ইসলামকে সোনাতলা উপজেলার করমজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ডেকে আনেন গ্রেপ্তার মারুফুল ইসলাম। মারুফুলের সঙ্গে তাঁর বন্ধু রিপন হাসান সেখানে যান। অন্যদিকে মাসুদ রানার কয়েকজন সহযোগী আশপাশে ওত পেতে থাকেন। এ সময় সিম বিক্রির টাকা নিয়ে তাঁরা বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে মাসুদ রানার সঙ্গে থাকা চাকু দিয়ে পারভেজ ইসলামকে আঘাত করা হয়। পারভেজের বন্ধু রিপন হাসানের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা পালিয়ে যান। পরে পারভেজকে উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিনই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় পারভেজের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে সোনাতলা থানায় পরদিন ১২ এপ্রিল অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে এই মামলার তদন্তভার পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক জাহিদ হাসান বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৮ মে গাজীপুর থেকে আসামি মারুফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর মারুফুল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।