মেঘনা থেকে দুটি লাশ উদ্ধারের পর সন্ধান মিলছে না আরেক সহযোগীর

হত্যা
প্রতীকী ছবি

আট ঘণ্টার ব্যবধানে মেঘনা নদীর মোহনা থেকে হাত ও পা বাঁধা অবস্থায় দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার হওয়ার পর জানা গেল, তাঁদের একজনের সহযোগীরও সন্ধান মিলছে না। নিখোঁজ ওই ব্যক্তির নাম শহীদ মিয়া (৩২)। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। স্বজনদের ধারণা, হয়তো ওই দুজনের মতো শহীদকেও খুন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে শহীদের মা ভৈরব নৌ থানায় এসে আহাজারি করেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার মেঘনা নদীর কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মোহনা থেকে দুটি লাশ উদ্ধার হয়। এর মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। পরিচয় শনাক্ত হওয়া ওই ব্যক্তির নাম আইয়ুব খান (৪২)। তিনি আশুগঞ্জের বাহাদুর গ্রামের মৃত আলী মিয়ার ছেলে। আইয়ুব খান এলাকায় ডাকাত হিসেবে পরিচিত।

পুলিশ জানায়, প্রথম লাশটি উদ্ধার হয় সকাল ১০টায় মেঘনা নদীর ভৈরব রেলওয়ে সেতু এলাকা থেকে। নিহত ব্যক্তির বয়স হবে ৩০ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে। ওই ব্যক্তির পা বাঁধা ছিল। মাথায় চারটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরনে ছিল কালো গেঞ্জি ও গামছা। এখনো তাঁর পরিচয় শনাক্ত হয়নি। আর সন্ধ্যায় ছয়টায় মেঘনার আশুগঞ্জ মোহনা থেকে উদ্ধার হয় আইয়ুব খানের লাশ। তাঁর পা ও হাত বাঁধা ছিল। তাঁর শরীরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

নিখোঁজ শহীদের বাড়ি একই উপজেলার চরচারতলা গ্রামে। লোকজন শহীদকেও ডাকাত হিসেবে জানে। শহীদ ও নিহত আইয়ুব একই দলভুক্ত হয়ে ডাকাতিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন।

নিখোঁজ শহীদের বাড়ি একই উপজেলার চরচারতলা গ্রামে। লোকজন শহীদকেও ডাকাত হিসেবে জানে। শহীদ ও আইয়ুব একই দলভুক্ত হয়ে ডাকাতিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। শহীদের মা শিল্পী বেগম বলেন, কাজে যাচ্ছেন বলে গত মঙ্গলবার তাঁর ছেলে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। এরপর আর ফিরে আসেনি। বুধবার থেকে মুঠোফোনও বন্ধ। এই অবস্থায় গতকাল শহীদের ঘনিষ্ঠ আইয়ুব খানের লাশ পাওয়ার পর তাঁদের মনে শহীদেরও একই পরিণতি হয়েছে বলে সন্দেহ জাগে।

পুলিশ ধারণা করছে, দুটি খুন একটি অপরটির সঙ্গে সম্পর্কিত। আইয়ুব খান দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। তাঁর বিরুদ্ধে ভৈরবসহ আশপাশের থানায় অন্তত ১০টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। অস্ত্র ও খুনের একাধিক মামলা আছে। কয়েক মাস আগে ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হন এবং জেল খেটে কিছুদিন আগে বের হয়ে আসেন। নিখোঁজ শহীদ হলেন আইয়ুবের ডাকাতির সহযোগী। শহীদের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে। ছয় মাস আগে শহীদকেও ডাকাতির অভিযোগে ভৈরব নৌ পুলিশ গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। আট ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি লাশ উদ্ধার হওয়ার পর এবং খুনের ধরন একই হওয়ার কারণে পুলিশের ধারণা, দুটি খুনই একসূত্রে গাঁথা। এখন আইয়ুবের সহযোগীর সন্ধান না পাওয়ায় এই ধারণা আরও বদ্ধমূল হয়েছে।

আইয়ুব খানের ছেলে জুয়েল মিয়া বলেন, ‘বুধবার থেকে আমার বাবার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তার আগে খোলা ছিল এবং কথা বলা গেছে।’

ভৈরব নৌ-থানার উপপরিদর্শক রাসেল মিয়া বলেন, শহীদের নিখোঁজ হওয়া রহস্য বাড়িয়ে দিয়েছে। দুটি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। তবে মামলা হবে। আইয়ুব খান হত্যা মামলাটি হবে আশুগঞ্জ থানায়, আর পরিচয় শনাক্ত না হওয়া ব্যক্তির হত্যা মামলাটি হবে ভৈরব থানায়। উভয় মামলার তদন্ত করবে নৌ-পুলিশ।