মেঘনায় ডুবে গেছে একটি বাল্কহেড ও দুটি ট্রলার

ভোলায় কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে মেঘনা নদীর তুলাতুলি এলাকায় একটি বালুভর্তি বাল্কহেড ডুবে যায়
ছবি: সংগৃহীত

ভোলায় কালবৈশাখীর কবলে পড়ে মেঘনা নদীতে একটি বালুভর্তি বাল্কহেড ও দুটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে গেছে। এই দুই নৌযানের সব আরোহীকে উদ্ধার করা হয়েছে। ঝড়ে দুটি খালি বাল্কহেড তুলাতুলি মাছঘাটে উঠে গেলে মাছের আড়তসহ একটি চায়ের দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া তীরে বেঁধে রাখা শতাধিক মাছ ধরার ট্রলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ঝড়ের কারণে কোনো ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে পুলিশ ও কোস্টগার্ড জানিয়েছে।

ভোলার আবহাওয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ শনিবার ভোর থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ভোলায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হয়। ভোর থেকে ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আর ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৫ নটিক্যাল মাইল।

মনপুরা উপজেলার মেঘনা নদীর লতার চরসংলগ্ন এলাকায় ঝড়ের কবলে পড়ে একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। ওই ট্রলারে নয়জন জেলে ছিলেন। খবর পেয়ে কোস্টগার্ডের মনপুরা ক্যাম্পের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে জেলেদের উদ্ধার করে। এ সময় ঢেউয়ের আঘাতে ট্রলারটি দুমড়েমুচড়ে যায়। কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা কে এম শাফিউল কিঞ্জল এ তথ্য জানান।

সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের কন্দ্রকপুর গ্রামের জেলে মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ভোরে ছয়জন জেলে নিয়ে তিনি মেঘনায় মাছ ধরতে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যান। পরে অন্য জেলেদের সহযোগিতায় তাঁরা উদ্ধার হয়েছেন।

তুলাতুলি মাছঘাট এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। সাড়ে সাতটার দিকে হঠাৎ নদী উত্তাল হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে ঝড় শুরু হয়। ঝড়ের কবলে পরে নদীতে থাকা এমভি তানিম-শামিম নামের একটি বালুভর্তি বাল্কহেড ডুবে যায়। তখন স্থানীয় জেলেরা বাল্কহেডে থাকা ছয়জনকে উদ্ধার করেন। এ সময় পাশে থাকা আরও দুটি খালি বাল্কহেড ঝড়ের আঘাতে ঘাটে উঠে গেলে মাছের আড়তসহ একটি চায়ের দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ঝড়ে ডুবে যাওয়া এমভি তানিম-শামীম বাল্কহেডের নাবিক মো. মনির হোসেন বলেন, সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি থেকে বালু নিয়ে মেঘনা নদীর উত্তরে যাওয়ার সময় ঝড়ের কবলে পড়ে বাল্কহেডটি ডুবে যায়। এখনো সেটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, জেলেরা ঝড়ের সময় ব্লকের গায়ে মাছ ধরার ট্রলারগুলো নিরাপদে রেখেছিলেন। কিন্তু ঝড়ের আঘাতে শতাধিক ছোট ট্রলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইলিশা ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক পারভেজ খান বলেন, ঝড়ের কবলে ইলিশা ফেরিঘাটের একটি সি-ট্রাকের তলা ফেটে গেছে। পরে সেটি নিরাপদ স্থানে নেওয়া হয়। ঝড়ের কারণে ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোলার ইলিশা লঞ্চ ও ফেরিঘাট থেকে কোনো নৌযান ছেড়ে যায়নি।

ভোলার ইলিশা নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাজালাল বাদশা বলেন, ঝড়ের কারণে বাল্কহেড ও ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।