সিনহা হত্যা মামলায় ষষ্ঠ দফার প্রথম দিনে সাক্ষ্য দিলেন ৫ পুলিশসহ ৮ জন

মেজর (অব.) সিনহা
ফাইল ছবি

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় সোমবার ষষ্ঠ দফার প্রথম দিনে সাক্ষ্য দিয়েছেন আটজন। সাক্ষ্য দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন টেকনাফ থানার বাহারছড়া শামলাপুর ফাঁড়িতে কর্মরত পুলিশ সদস্য। তাঁরা সিনহার মরদেহ হস্তান্তর, সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি ও মালামাল জব্দ করার ঘটনায় যুক্ত ছিলেন।

সাক্ষ্য গ্রহণের সময় আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ১৫ জন আসামি।

সোমবার সাক্ষ্য দেওয়া ৮ জন হলেন বাহারছড়া পুলিশের ফাঁড়ি তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম, কনস্টেবল পলাশ ভট্টাচার্য, আবু সালাম, হিরু মিয়া, ওসামা মারমা, নীলদরিয়া বাসের সহকারী নবী হোসেন, চা-বিক্রেতা আবুল কালাম ও মাদ্রাসাছাত্র শহিদ উদ্দিন।

সোমবার ষষ্ঠ দফার প্রথম দিনে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ১৫ জনকে হাজির রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৮ জন।

আইনজীবীরা বলেন, সকাল সাড়ে ১০টায় প্রথম সাক্ষ্য দেন বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমিনুল ইসলাম। তিনি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে সিনহার লাশ হস্তান্তর করেছিলেন। তাঁর জবানবন্দি গ্রহণ করছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও পিপি ফরিদুল আলমসহ তিনজন আইনজীবী। এরপর তাঁকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। আদালত পরিচালনা করেন জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত আরও সাতজন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও পিপি ফরিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, সোমবার ষষ্ঠ দফার প্রথম দিনে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ১৫ জনকে হাজির রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৮ জন। এ নিয়ে ৪৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হলো। এ মামলার মোট সাক্ষী ৮৩ জন। মঙ্গলবার আরও অন্তত ১২ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হতে পারে।

মেজর সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ওসি প্রদীপকে আদালতে নেয়া হচ্ছে
ফাইল ছবি

আইনজীবীরা বলেন, প্রথম দফায় গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত তিন দিনে এ মামলার সাক্ষ্য দেন দুজন। তাঁরা হলেন মামলার বাদী ও সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস এবং ২ নম্বর সাক্ষী ঘটনার সময় সিনহার সঙ্গে গাড়িতে থাকা সাহেদুল ইসলাম। দ্বিতীয় দফায় চার দিনে সাক্ষ্য দেন ৪ জন, তৃতীয় দফায় তিন দিনে ৮ জন, চতুর্থ দফায় দুই দিনে ৬ জন এবং পঞ্চম দফায় তিন দিনে ১৫ জন সাক্ষ্য দেন।

আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। এর মধ্যে টেকনাফে দুটি এবং রামুতে একটি মামলা হয়। ঘটনার পাঁচ দিন পর, অর্থাৎ ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র‍্যাব।

২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমারসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র‍্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।