মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি

রাজশাহীর বেসরকারি শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের সনদ ও নম্বরপত্র দেয়নি। শিক্ষার্থীরা যেসব কলেজে মাইগ্রেশনে (স্থানান্তর) ভর্তি হয়েছিলেন, সেসব কলেজে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এসব কাগজপত্র দেওয়ার শেষ সময় ছিল।

এ পরিস্থিতিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ ও শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের ডিন শিক্ষার্থীরা যেসব কলেজে ভর্তি হয়েছেন সেসব কলেজের কর্তৃপক্ষের কাছে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার তিনি ওই চিঠি পাঠান।

এর আগে গত রোববার রাত ১০টা পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সনদের দাবিতে শিক্ষার্থীরা কলেজে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন। পরদিন সোমবার বিকেল চারটায় শিক্ষার্থী ও কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিয়ে আলোচনার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। কিন্তু এতে শিক্ষার্থীরা আলোচনায় বসলেও কলেজের কেউ উপস্থিত হননি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ ও শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের ডিন অধ্যাপক নওশাদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেয়নি। তাঁদের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে মাইগ্রেশন (স্থানান্তর) করা কলেজে ভর্তির কাগজপত্র দেওয়ার শর্ত ছিল। তিনি এই কলেজের পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছেন। তাঁদের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি সংশ্লিষ্ট কলেজে চিঠি পাঠিয়ে তাদের অনুরোধ করেছেন, যাতে এই শিক্ষার্থীরা অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন। চিঠি পাঠানোর পর ওই কলেজগুলো এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।

রাজশাহী নগরের চন্দ্রিমা থানার খড়খড়ি বাইপাস এলাকায় শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ। এই কলেজকে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) অনুমোদন দেয়নি।

এ বিষয়ে ওই কলেজের শিক্ষার্থী শাহনেওয়াজ আহমেদ মুঠোফোনে বলেন, তিনি মাইগ্রেশন করে রংপুরের একটি মেডিকেল কলেজ পেয়েছেন। ডিনের চিঠি পাঠানোর খবর শুনে তিনি রংপুরে যাচ্ছেন। সেখানে তাঁর কলেজ কর্তৃপক্ষ চিঠি পেয়েছে। আপাতত কোনো সমস্যা হবে না। তবে তাঁদের কাগজপত্র দরকার।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী নগরের চন্দ্রিমা থানার খড়খড়ি বাইপাস এলাকায় শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ। এই কলেজকে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) অনুমোদন দেয়নি। অনুমোদনহীন এই কলেজে কয়েক দফায় ২২৫ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। গত ২ নভেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বন্ধের নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের অন্য কোনো মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করে দিতে বলা হয়। তখন কলেজ কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানায়।

শিক্ষার্থীদের ৩০ জানুয়ারি পরীক্ষা রয়েছে। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ভর্তিসংক্রান্ত কাগজপত্র দিতে না পারলে তাঁদের ভর্তি বাতিল হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতে ডিনের চিঠি পাঠানোর জন্য শিক্ষার্থীরা আপাতত মাইগ্রেশনকৃত কলেজে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য গত রোববার থেকে বিভিন্ন সময় শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপক পরিচালক মনিরুজ্জামানের মুঠোফোনে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে মঙ্গলবার তিনি স্থানীয় একটি সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়েছেন, মাইগ্রেশন নিতে ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রী চুক্তি অনুযায়ী কলেজের হালনাগাদ বকেয়া পরিশোধ করে আবেদন করলে অবশ্যই তাঁরা যাবতীয় কাগজপত্র পাবেন। এ জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আইনশৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কলেজে যোগাযোগ করলেই হবে।