মেধাতালিকায় শীর্ষস্থানসহ অর্ধেকই বগুড়ার বিদ্যালয়

রাজশাহী বোর্ডে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের চোখে-মুখে তাই খুশির ঝিলিক
রাজশাহী বোর্ডে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের চোখে-মুখে তাই খুশির ঝিলিক

জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে এবারও সাফল্যের শীর্ষে বগুড়ার সেরা বিদ্যালয়গুলো। এবার শিক্ষা বোর্ডে সেরা ২০-এর তালিকায় শীর্ষ পাঁচসহ সেরা নয়টি প্রতিষ্ঠানই বগুড়ার। এর মধ্যে বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ গতবারের মতো এবারও বোর্ডে প্রথম অবস্থান ধরে রেখেছে।
গতবার বোর্ডে তৃতীয় অবস্থানে থাকা বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এক ধাপ এগিয়ে এবার দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। অন্যদিকে মেধাতালিকার দ্বিতীয় অবস্থান থেকে এক ধাপ পিছিয়ে তৃতীয় অবস্থানে নেমে এসেছে বগুড়া জিলা স্কুল। টানা দ্বিতীয়বারের মতো চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থান ধরে রেখেছে বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং বগুড়া আর্মড পুলিশ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ। গতবারের বোর্ডসেরার তালিকা থেকে ছিটকে পড়েছে এসওএস হারম্যান মেইনর স্কুল অ্যান্ড কলেজ। অন্যদিকে এবারই সেরার তালিকায় যুক্ত হয়েছে বগুড়ার মিলেনিয়াম স্কলাস্টিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল এবং পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এই তিনটি প্রতিষ্ঠান এবার যথাক্রমে ৯ম, ১৭তম ও ২০তম অবস্থানে উঠে এসেছে। এ ছাড়া গতবার ১২তম অবস্থান থেকে চার ধাপ পিছিয়ে পড়া বগুড়া পল্লী উন্নয়ন ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এক বছর পর আগের অবস্থানে ফিরে এসেছে। বোর্ডসেরা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিদ্যালয়গুলোতে এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বেড়েছে।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বোর্ডসেরা বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার ২৯৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে শতভাগ পাস করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৮৮ জন। গত বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি থেকে ২৯১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে সবাই উত্তীর্ণ হয়েছিল। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২৮৮ জন।
বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কর্নেল মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘টানা দুই দফা বোর্ডসেরার সাফল্যের পেছনে বিদ্যালয়ে শিক্ষার সুন্দর পরিবেশের পাশাপাশি শৃঙ্খলা ও নৈতিকতার কড়াকড়ি বড় ভূমিকা রাখছে। কারণ, কোনো শিক্ষার্থী শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে বা কারও নৈতিকতার বিচ্যুতি ঘটলে তাৎক্ষণিক বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের শাস্তি চালু রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা নিয়মানুবর্তিতার বাইরে যেতে পারে না।’
বোর্ডসেরা প্রতিষ্ঠানপ্রধান বলেন, ‘সন্তানদের ক্লাসমুখী করতে অভিভাবকেরা আন্তরিক হলে এবং শিক্ষকেরা শ্রেণিকক্ষে আন্তরিকতার সঙ্গে পাঠদান করলে কোনো শিক্ষার্থীকে কোচিং সেন্টারে পাঠানোর প্রয়োজন নেই।’
এবার দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২৬৪ জন পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫৯ জন। গত বছর এই বিদ্যালয় থেকে ২৩৮ পরীক্ষার্থীর মধ্যে শতভাগ পাস করেছিল। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২৩৬ জন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘বোর্ডে শীর্ষস্থান থেকে গতবার তৃতীয় অবস্থানে নেমে গিয়েছিলাম। এবার এক ধাপ এগিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছি। সামনে আমাদের লক্ষ্য বোর্ডে শীর্ষ অবস্থানে উঠে আসার মাধ্যমে হারানো সাফল্য ও কৃতিত্ব অক্ষুণ্ন রাখা।’
তৃতীয় অবস্থানে থাকা বগুড়া জিলা স্কুল থেকে ২৭৭ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৬৮ জন। গতবার এই বিদ্যালয় থেকে ২৫৪ পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২৪৫ জন। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক রমজান আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুঠোফোনের অবাধ ব্যবহার ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। কারণ, পড়াশোনার সময়টাতে এমনকি ক্লাসে এসেও শিক্ষার্থীরা মুঠোফোনে ইন্টারনেট ও ফেসবুক নিয়ে পড়ে থাকে। এ থেকে বেরিয়ে আসতে সন্তানদের মুঠোফোনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে অভিভাবকদের এগিয়ে আসতে হবে।’