মেহেরপুরে এক ঠিকাদারের মামলায় ৩ সড়কের কাজ বন্ধ

একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পেলেও দরপত্রে ভুল আছে উল্লেখ করে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর জেরে মামলা করে ওই প্রতিষ্ঠান।

মেহেরপুর জেলার ম্যাপ

দরপত্র প্রক্রিয়ার অস্বচ্ছতা ও কার্যাদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে গরমিলের অভিযোগে ঠিকাদারের করা মামলার কারণে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তিনটি সড়কের সংস্কারকাজ তিন বছর ধরে আটকে আছে। সড়ক তিনটি হলো উপজেলার বামুন্দী-কাজিপুর, আকুবপুর-গোয়ালগ্রাম ও কাজিপুর-নওদাপাড়া। এর মধ্যে দুটি সড়কের ১২ কিলোমিটার করে ও একটির ৮ কিলোমিটার সংস্কার হওয়ার কথা। তিন বছর ধরে সড়ক তিনটি বেহাল পড়ে আছে। এতে এসব সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন আশপাশের বাসিন্দারা।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে বামুন্দী-কাজিপুর সড়ক ১ কোটি ৫ লাখ, আকুবপুর-গোয়ালগ্রাম সড়ক ১ কোটি ১৩ লাখ ও নওদাপাড়া-কাজিপুর সড়ক সংস্কারে প্রায় ৩ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রে অসংগতি থাকায় প্রকৌশল অধিদপ্তর একই দিনে পুনঃ দরপত্র আহ্বান করে। এ কারণে প্রথম দরপত্র আহ্বানে কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি আদালতে মামলা করে। পরে আদালতের নির্দেশে সড়কের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

উপজেলার বামুন্দী-কাজিপুর সড়কে গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, বামুন্দী বাজার থেকে এক কিলোমিটার পথ পেরোলেই পিচঢালা সড়কটি একেবারে খানাখন্দে ভরা। এসব খানাখন্দে জমে আছে বৃষ্টির পানি। কাজিপুর গ্রামের বাসিন্দা শারভানু বেগম মাথাব্যথার চিকিৎসা করাতে ভ্যানে করে ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে মাঝপথেই তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে বামুন্দী বাজারের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করান।
পথচারীরা জানান, এ সড়কে চলতে অসুস্থ ব্যক্তিদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ ছাড়া কোনো যানবাহন নিয়ে যেতেও বেশ বেগ পেতে হয়। লামিয়া এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ট্রাকের চালক উজ্জ্বল শেখ বলছিলেন, গত সপ্তাহে পাটবোঝাই একটি ট্রাক রাস্তায় কাত হয়ে পড়ে গিয়েছিল। ওই ট্রাকের পাট বৃষ্টিতে ভিজে কাদায় মেখে যায়। এলাকাবাসীর সহায়তায় ট্রাকটি সরানো গেলেও পাটে কাদা লাগায় ব্যবসায়ীকে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়।
সড়কের এমন দশা দেখে যোগাযোগ করা হয় মামলা করা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জাকির ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জাকাউল্লাহ জাকিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘একই দিনে ৯টি সড়ক উন্নয়নকাজের দরপত্রের লটারি হয়। আমার প্রতিষ্ঠান তিনটি কাজ পেলেও দরপত্রে ভুল আছে উল্লেখ করে আবার দরপত্র আহ্বান করা হয়। এ জন্য আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।’
এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী গোলাপ আলী বলেন, মামলাটি প্রায় শেষের পথে। নিষ্পত্তি হলেই সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে।
এ বিষয়ে মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সাংসদ মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান বলেন, জেলা সড়ক উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি হয়।