মেয়রের স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলন, ২২ কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত

ঝালকাঠি পৌর মেয়রের স্বাক্ষর জাল করে ভবিষ্য তহবিল (প্রভিডেন্ট ফান্ড) থেকে ১৮ লাখ ২৯ হাজার টাকা উত্তোলনের অভিযোগে ২২ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে পৌর মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার ওই ২২ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
এ ঘটনায় পৌর মেয়রের নির্দেশে ১১ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটি ঘটনার সত্যতা উল্লেখ করে ২৩ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। ২৪ নভেম্বর কর্মচারীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ২৬ নভেম্বর সকাল ১০টার মধ্যে জবাব জানতে চান মেয়র। অভিযুক্ত কর্মচারীরা লিখিতভাবে তাঁদের জবাব দিলেও তা সন্তোষজনক না হওয়ায় পৌরসভায় জরুরি সভা করে তাঁদের সাময়িক বরখাস্তের ওই সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, ভবিষ্য তহবিল থেকে মেয়রের স্বাক্ষর জালের ঘটনা ঘটেছে। ভবিষ্য ও আনুতোষিক তহবিল হিসাবের ব্যাংক বিবরণীতে এর প্রমাণ মিলেছে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, তদন্ত কমিটির জিজ্ঞাসাবাদে কর্মচারীরা জানান, ট্রাকচালকের সহকারী মিলন হাওলাদার ও মর্তুজ আলী তাঁদের চেকে স্বাক্ষর করিয়ে এনে দেন। পৌর শহরের পশ্চিম ঝালকাঠি এলাকার জনৈক কবির হোসেন এ জাল স্বাক্ষরে সহায়তা করেন।

ঝালকাঠি পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রত্যেকের নামে রূপালী ব্যাংক ঝালকাঠি শাখায় ভবিষ্য তহবিল নামে একটি হিসাব আছে। এতে প্রতি মাসে কর্মচারীদের বেতনের ১০ শতাংশ, পৌরসভার ১০ শতাংশসহ মোট ২০ শতাংশ টাকা এ হিসাবে জমা হয়। বিধি অনুযায়ী এই টাকা কর্মচারীরা চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার সময় পেয়ে থাকেন বা জরুরি প্রয়োজনে মেয়রের কাছে কেউ আবেদন করে পৌরসভা থেকে ওই টাকা ঋণ নিতে পারেন। ব্যাংকের হিসাব থেকে এ টাকা উত্তোলন করতে চেকে মেয়র ও সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর যৌথ স্বাক্ষর প্রয়োজন। ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত মোট ১০৪টি চেকে মেয়রের স্বাক্ষর জাল করে ১৮ লাখ ২৯ হাজার টাকা উত্তোলন করেন ওই ২২ কর্মচারী।
পৌর মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার বলেন, ‘আমার স্বাক্ষর জাল করার অপরাধে ২২ কর্মচারীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিগগিরই মামলা করা হবে।’