মোখলেছুরের শখের কফি চাষে সাফল্য

নিজ বাগানে কফি ফল তুলতে ব্যস্ত মোখলেছুর রহমান। গত শুক্রবার তারাগঞ্জের গোয়ালবাড়ি গ্রামে।
ছবি: প্রথম আলো

কফি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন মোখলেছুর রহমান। বাড়ির পাশে গড়ে তুলেছেন অ্যারাবিকা জাতের কফির বাগান। গাছ রোপণের তিন বছর পর ফল আসতে শুরু করেছে। সেগুলো বিক্রি করে টাকাও আসছে বেশ।

মোখলেছুর রহমানের (৩৩) বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের গোয়ালবাড়ি গ্রামে। তারাগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে গ্রামটির অবস্থান। সম্প্রতি গোয়ালবাড়ি গ্রামে গিয়ে জানা যায়, মোখলেছুর রহমানের কফি চাষের আদ্যোপান্ত।

উপজেলা সদর থেকে কাঁচা-পাকা পথ ধরে মোখলেছুরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তিনি বাড়িতে নেই। খোঁজ করতেই একজন আঙুল উঁচিয়ে দেখিয়ে দেন, ‘ওই যে মোখলেছুর কফিবাগানে কাজ করছেন।’ কিছু দূর এগোতেই দেখা যায়, নিজের বাগানে কফিগাছ থেকে ফল তুলছেন মোখলেছুর। সাংবাদিক পরিচয় শুনে বাগান থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি।

স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে মোখলেছুর রহমানের সংসার। বর্তমান তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানির শোরুমের জেলা পরিদর্শক। চাকরির পাশাপাশি তিনি কফি চাষ করছেন।

কফি চাষে শুরুর কথা জানতে চাইলে মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘২০১৬ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারি, পার্বত্য অঞ্চলে কফির চাষ হচ্ছে। তখন আমার মনে হয়, পার্বত্য অঞ্চলের মতো তারাগঞ্জে উঁচু জমি আছে। এই উঁচু জমিতে কফি চাষ করা সম্ভব। এই ভাবনা থেকেই শখ করে কফি চাষের পরিকল্পনা করি। ২০১৭ সালের মে মাসে চট্টগ্রামের জাহানারা গ্রিন অ্যাগ্রো ফার্মের মাধ্যমে ভারত থেকে অ্যারাবিকা জাতের কফির চারা এনে রোপণ করি।’

মোখলেছুর রহমান জানান, তাঁর ২৮ শতক জমিতে ৪৫০টি কফিগাছ আছে। এ কফি চাষ করতে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিন বছর পর প্রতিটি গাছেই ফল এসেছে। ফলনও ভালো হয়েছে। প্রতিটি গাছে দুই কেজি করে কফি ফল পাওয়া যাচ্ছে। ২০০ টাকা কেজি হিসেবে এ ফল চট্টগ্রামের কফি ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে এক লাখ টাকার কফি ফল বিক্রি হয়েছে। গাছে যে পরিমাণ কফি ফল আছে, তা বিক্রি হবে আরও ৮০ হাজার টাকা। বছরে একবার ফল পাওয়া যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঊর্মি তাবাসসুম বলেন, কফি সাধারণত পাহাড়ি ফসল। উঁচু এবং যেখানে পানি জমে থাকে না, এমন সমতল জমিতে কফি চাষ করা যাবে। তারাগঞ্জের মাটি বেলে-দোআঁশ হওয়ায় এই মাটি কফি চাষের উপযোগী।