মোটরসাইকেল রাখাকে কেন্দ্র করে কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

লাশ
প্রতীকী ছবি

যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় মোটরসাইকেল রাখাকে কেন্দ্র করে এক কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ রোববার ভোরে ঢাকায় নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল শনিবার সকালে মনিরামপুর উপজেলার খালিয়া এলাকায় তাঁকে পিটিয়ে জখম করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ নাইম হোসেন (২৪) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি মনিরামপুর উপজেলার কৃষ্ণবাটি গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে।

নিহত ওই ছাত্রের নাম বোরহান কবির (১৮)। তিনি মনিরামপুর উপজেলার মোহনপুর এলাকার আহসানুল কবিরের ছেলে। তিনি মনিরামপুর সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। কয়েক দিন আগে ভয় পেয়ে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন বলে পরিবারের দাবি।

নিহত কলেজছাত্রের পরিবারের দাবি, শনিবার সকালে বোরহান কবির বাইসাইকেল চালিয়ে খালিয়া এলাকায় যান। ওই সময় রাজগঞ্জ-হেলাঞ্চি সড়ক দিয়ে নিজের মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন নাইম হোসেন। সড়কে মোটরসাইকেল থামিয়ে তিনি মুঠোফোনে কথা বলছিলেন। তখন বোরহান নিজের বাইসাইকেল রেখে নাইমের কাছে মোটরসাইকেলের চাবি চান। ওই সময় তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সড়কের পাশ থেকে লাঠি নিয়ে তিনি বোরহানকে পিটিয়ে জখম করেন। পরে আশপাশের লোকজন রাজগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্পে খবর দেন। বেলা ১১টার দিকে পুলিশ গিয়ে বোরহান ও নাইমকে ক্যাম্পে নিয়ে যায়।

নিহত বোরহান কবিরের বাবা আহসানুল কবির অভিযোগ করেন, ‘মোটরসাইকেল রাখা নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে নাইমসহ দু-তিনজন আমার ছেলেকে বেদম মারধর করেন। পরে পুলিশ আমার ছেলেকে ধরে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। বোরহানের মাথা ফেটে রক্ত বের হলেও তাঁকে হাসপাতালে না পাঠিয়ে পুলিশ হাতকড়া পরিয়ে ক্যাম্পে বসিয়ে রাখে। ১৫-২০ দিন আগে ভয় পেয়ে বোরহান মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার চিকিৎসা চলছিল। পুলিশকেও জানানো হয় সে মানসিক রোগী। পরে বাড়ি থেকে কাগজপত্র নিয়ে দেখালে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। বেলা একটার দিকে তাকে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আজ রোববার ভোর চারটার দিকে ঢাকায় পৌঁছানোর আগেই সে মারা যায়।’

এদিকে মারপিটের ঘটনায় নাইম হোসেনকে আসামি করে শনিবার রাতে মনিরামপুর থানায় মামলা করেন বোরহানের বাবা আহসানুল কবির। পুলিশ ওই রাতেই নাইমকে গ্রেপ্তার করে।

মনিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান বলেন, পরিবারের দাবি, বোরহান কবির মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। মোটরসাইকেলের চাবি চাওয়াকে কেন্দ্র বোরহানকে পিটিয়ে জখম করা হয়। পরে তিনি মারা যান। এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। আসামি নাইম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বোরহানের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।