মোহনগঞ্জের মৃত সেই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে ফেলে রাখার পর মৃত সেই ব্যক্তি (৫৮) করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না। গতকাল রোববার রাতে নমুনা পরীক্ষা করে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর আগে গত শনিবার দুপুরে তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে পাঠানো হয়।

মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আহাদ খান আজ সোমবার প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শনিবার দুপুরে করোনা সন্দেহে ওই ব্যক্তিকে তাঁর এক স্বজন হাসপাতালের প্রাঙ্গণে ফেলে রেখে যান। এরপর বিকেলে ওই ব্যক্তি মারা যান। কিন্তু সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করে তাঁর শরীরে কোভিড-১৯ পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মোহনগঞ্জের মল্লিকপুর গ্রামের ওই ব্যক্তি গত দুই সপ্তাহ আগে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। এরপর তিনি জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। চিকিৎসার উদ্দশ্যে তিনি শুক্রবার সন্ধ্যায় মোহনগঞ্জ পৌর শহরের আল মুবিন রোড এলাকায় তাঁর ভাগনের বাসায় আসেন। পরদিন শনিবার সকালে ভাগনের বউ তাঁকে নিয়ে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। সেখানকার চিকিৎসকেরা ওই ব্যক্তির উপসর্গ দেখে তিনি করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন বলে সন্দেহ করেন। এ জন্য চিকিৎসকেরা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁকে অক্সিজেন দেন। পরে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু করোনার ভয়ে তাঁকে হাসপাতালের মাঠের এক কোণে বসিয়ে রেখে দ্রুত চলে যান ওই নারী। এরপর আর কেউ খোঁজ নেয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। অসুস্থ ব্যক্তি কিছুক্ষণ পর সেখানেই মারা যান।

মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আহাদ খান বলেন, ওই দিন সন্ধ্যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পর রাত সাড়ে সাতটায় পুলিশ ওই ব্যক্তি স্বজনদের নিয়ে হাসপাতাল মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে সৎকার কাজ সম্পন্ন করা হয়।

এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি তাঁর স্বজনদের। স্বজনেরা ও প্রতিবেশীরা আজ হাসপাতালের সামনের ফটকে মানববন্ধন করেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তাঁরা। আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও মানববন্ধন অব্যাহত ছিল।