ম্রো ভূমিতে বিনোদন পার্ক না করার দাবিতে বিশিষ্টজনদের বিবৃতি

ফাইল ছবি

বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল ও পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ম্রোদের প্রতিবাদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকেরা। তাঁরা ম্রো–অধ্যুষিত এলাকায় এ ধরনের প্রকল্প বাতিলসহ পার্বত্য অঞ্চলে ভূমি কমিশন কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন।

আজ সোমবার বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের পক্ষে একটি বিবৃতি পাঠান। সেখানে বলা হয়, ম্রো জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা, প্রাকৃতিক সম্পদে প্রথাগত অভিগম্যতা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও নিরাপত্তা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।

সিকদার গ্রুপের পাঁচ তারকা হোটেল ম্যারিয়টের নির্মাণকাজ বন্ধের দাবিতে ৮ নভেম্বর ম্রো জনগোষ্ঠী এক কালচারাল শোডাউন করে। তাঁরা পাঁচ দিনের মধ্যে নির্মাণকাজ বন্ধের দাবি জানিয়েছিলেন। তাঁদের সমর্থন জানিয়ে বিবৃতিদাতারা বলেন, এই স্থাপনা নির্মাণের কারণে ম্রো সম্প্রদায়ের ১০ হাজার নাগরিক তাদের ভিটেমাটি, আবাসস্থল এবং জুম ফসলি জমির ওপর আগ্রাসন হিসেবে দেখছে। চিটাগাং হিল ট্র্যাকস কমিশনও এ প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে।

বিবৃতিদাতারা বলেছেন, ম্রোদের দাবি উপেক্ষা করে পাহাড় কাটা শুরু হয়েছে এবং তাদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। হোটেল ও বিনোদন পার্কে বহিরাগতদের আগমনের কারণে ম্রো নারীরা নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বেন। ম্রো জনগোষ্ঠীর জুমচাষের জমি আরও সংকুচিত হবে।

গোষ্ঠী ও ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষার জন্য জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষা করে বান্দরবানের মতো সংবেদনশীল পরিবেশে পর্যটনসহ সব অনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত করার এবং ভূমি দখলদারদের উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। এ ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে দ্রুত ভূমি কমিশন কার্যকর করার দাবিও তুলেছেন তাঁরা।

বিবৃতিদাতারা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, সিপিডির সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সেন্ট্রাল উইমেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পারভীন হাসান, অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, গীতি আরা নাসরিন, নারী অধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, আইনজীবী শাহদীন মালিক, সারা হোসেন, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নূর খান, লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের শাহীন আনাম, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সঞ্জীব দ্রং প্রমুখ।