ময়মনসিংহে চালের দাম বেড়েই চলছে

গত মাসে চেয়ে চালের মূল্য কেজিপ্রতি তিন–চার টাকা বেড়েছে। আর গত বছর এ সময় দাম ১২–১৫ টাকা কম ছিল ।

ময়মনসিংহে গত বছরের তুলনায় এ বছর চালের দাম বেশি। বেচা-কেনার পরিমাণও কিছুটা কম। শনিবার বিকেলে নগরের মেছুয়া বাজারে
প্রথম আলো

ময়মনসিংহে চালের আড়তগুলোতে চালের দাম বেড়েই চলেছে। বাড়তি দাম দিয়ে চাল কেনায় ক্রেতাদের ভোগান্তিও বাড়ছে। আর বিক্রেতারা বলছেন, বাড়তি দামে চাল কিনতে হচ্ছে বলে কেজিপ্রতি তিন–চার টাকা বেশিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে খুচরা ও পাইকারি বাজারে দামের বিস্তর ফারাক নেই।

গতকাল শনিবার শহরের হেজবুল্লাহ রোড ও শম্ভুগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন আড়তে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি আড়তের সামনে মূল্যতালিকা ঝোলানো আছে। ২০–২২ রকমের চালের নাম ও প্রতি কেজির মূল্য লেখা থাকলেও ব্রি-২৮, ব্রি-২৯, পাইজাম, নাজিরশাইল ও মিনিকেট চালের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রি-২৮ জাতের চাল প্রতি কেজি ৪২ টাকা, ব্রি-২৯ জাতের চাল ৪৯-৫২ টাকা ও নাজিরশাইল চাল প্রতি কেজি ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পাইকারি বাজারে। এ ছাড়া চিনিগুঁড়া ৬৫ টাকা, পাইজাম ৪৮ ও কালিজিরা চাল ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এগুলোর পাশাপাশি আতপ ৪৮ ও ইরি ৪০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা ৪৫ ও কাটারিভোগ চাল ৬২-৬৬ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা বলেন, কমবেশি সব ধরনের চালের মূল্য গত মাসের তুলনায় বেড়েছে। এর ফলে বিক্রির পরিমাণ কিছুটা কম।

এভাবে দাম বাড়ার কারণে পরিবারের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজারে নতুন চাল আসা সত্ত্বেও চালের দাম না কমাটা রহস্যজনক।
এনামুল হোসেন, ক্রেতা

বিএল ট্রেডার্সের মালিক সুশান্ত চক্রবর্তী ও প্রফুল্ল খাদ্যভান্ডারের তাপস কুমার জানান, বর্তমানে চালের সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। তবে চালের মূল্যবৃদ্ধির জন্য মিলাররা দায়ী। মিলগুলোতে গত সপ্তাহের তুলনায় চালের দাম বস্তাপ্রতি ১০০-১৫০ টাকা বেড়েছে।

জেলা মিলার মালিক সমিতির সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, বর্তমানে ধানের বাজার চাঙা থাকায় কৃষকদের কাছ থেকেই বাড়তি দামে ধান ক্রয় করতে হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি মণ ধান ১ হাজার ১০০ টাকা। অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির জন্য তাঁরা এখনো পুরোদমে নতুন ধান কেনা শুরু করেননি। ধানের দাম কমতে শুরু করলে চালের দাম কমবে।

বাজার ঘুরে জানা যায়, গত মাসেও চালের মূল্য কেজিপ্রতি তিন–চার টাকা কম ছিল। আর একই সময়ে গত বছরে চালের দাম কেজিপ্রতি ১২–১৫ টাকা কম ছিল বলে জানান ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। চলতি মাসে পাইকারি বাজারে এই মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খুচরা বাজারেও। ময়মনসিংহের কাঠগোলা, কাঁচিঝুলি ও চরপাড়ার খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পাইজাম ৫০ টাকা, ব্রি-২৮ জাতের চাল ৪৪ ও ব্রি-২৯ জাতের চাল ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

স্বদেশি বাজারে ক্রেতা এনামুল হোসেন বলেন, এভাবে দাম বাড়ার কারণে পরিবারের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজারে নতুন চাল আসা সত্ত্বেও চালের দাম না কমাটা রহস্যজনক।

আরেক ক্রেতা রাশেদুল হক বলেন, মূল্যবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরা না গেলে ভবিষ্যতে আরও কঠিন সময় পার করতে হবে।