আট কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন মঞ্জুর

১৩ আগস্ট শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোরকে পৈশাচিকভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় আরও ১৫ কিশোরকে পিটিয়ে আহত করা হয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কেন্দ্রের অপর আট কিশোরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শিশু কেন্দ্রেই রাখা হয়। আদালত চার দিনের জিজ্ঞাসাবাদ মঞ্জুর করার পরিপ্রেক্ষিতে আগামীকাল থেকে পুলিশ তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবে বলে জানা গেছে।

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালক) তিন কিশোর হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার অপর আট কিশোরকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কেন্দ্রের একটি নির্দিষ্ট কক্ষে নিরিবিলি পরিবেশে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক টি এম মূসা এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. রোকিবুজ্জামান ওই আট কিশোরকে সাত দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে চার দিনের জিজ্ঞাসাবাদ মঞ্জুর করেন। আগামীকাল শুক্রবার থেকে পুলিশ তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক রোকিবুজ্জামান বলেন, তিন কিশোরকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আগেই কেন্দ্রের অপর আট কিশোরকে শ্যোন অ্যারেস্ট (গ্রেপ্তার) দেখিয়ে কেন্দ্রেই রাখা হয়। তিন কিশোরকে নির্যাতন করে হত্যার ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজসহ গ্রেপ্তার আট কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে সাত দিনের আবেদন জানানো হয়। আদালত চার দিন মঞ্জুর করেছেন। তবে আদালত আদেশ দিয়েছেন, কেন্দ্রের ভেতরে একটি নির্দিষ্ট কক্ষে নিরিবিলি পরিবেশে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, আগামীকাল সকাল থেকে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হবে।

আদালত আদেশ দিয়েছেন, কেন্দ্রের ভেতরে একটি নির্দিষ্ট কক্ষে নিরিবিলি পরিবেশে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে।
রোকিবুজ্জামান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক

১৩ আগস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোরকে পৈশাচিকভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় আরও ১৫ কিশোরকে পিটিয়ে আহত করা হয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কেন্দ্রের অপর আট কিশোরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শিশু কেন্দ্রেই রাখা হয়। বাংলাদেশের শিশু আইন-২০১৩ অনুযায়ী, ১৮ বছর বা এর কম বয়সী শিশু-কিশোরের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের জেলে নেওয়ার পরিবর্তে উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠাতে হবে, যাতে তারা সংশোধিত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে। হতাহত ও শ্যোন অ্যারেস্ট হওয়া কিশোরেরা আগে করা অপরাধের কারণে সংশোধনের উদ্দেশ্যে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ছিল।

এর আগে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে কেন্দ্রের আরও পাঁচ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে তাদেরকে আবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক আবদুল্লাহ আল মাসুদ, সহকারী তত্ত্বাবধায়ক মাসুম বিল্লাহকে পাঁচ দিন এবং কারিগরি প্রশিক্ষক ওমর ফারুক, ফিজিক্যাল ইনস্ট্রাক্টর শাহানুর আলম এবং সোশ্যাল সাইকো কাউন্সিলর মুশফিকুর রহমানকে তিন দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদেরকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।