যশোরের প্রবীণ রাজনীতিক খালেদুর রহমানের জীবনাবসান

যশোরের বর্ষীয়ান রাজনীতিক খালেদুর রহমান টিটো
ছবি: সংগৃহীত

যশোরের বর্ষীয়ান রাজনীতিক খালেদুর রহমান টিটো (৭৬) ইন্তেকাল করেছেন। আজ রোববার দুপুর ১টা ২০ মিনিটে তিনি যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি যশোর-৩ (সদর) আসন থেকে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ, জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব ও প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।

বেলা তিনটার দিকে খালেদুর রহমানের মরদেহ হাসপাতাল থেকে বাসভবনে নেওয়া হয়। শেষবারের মতো তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে যশোর শহরের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ তাঁর বাড়িতে ভিড় করছেন। ২০০৭ সালে তাঁর স্ত্রী রওশন আরা মারা যান। তিনি তিন ছেলে ও নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

খালেদুর রহমানের ব্যক্তিগত বিশেষ সহকারী নিয়াজ মাহমুদ বলেন, ফুসফুসে সংক্রমণজনিত কারণে তিন দিন আগে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর আজ দুপুরে তিনি মারা যান। আগামীকাল দুপুরে নামাজের পর যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে কারবালা সরকারি কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন করা হবে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, খালেদুর রহমান ১৯৪৫ সালের ১ মার্চ কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন আইনজীবী। সাত ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তাঁর বড় ভাই মাসুকুর রহমান ১৯৭১ সালে রাজাকার বাহিনীর হাতে নৃশংসভাবে নিহত হন। খালেদুর রহমান যশোর জিলা স্কুল থেকে ১৯৬০ সালে এসএসসি এবং ১৯৬৩ সালে ঢাকার কায়েদে আজম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৭ সালে কারাগারে অবস্থানকালে যশোর এম এম কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে লেখাপড়া শেষ করতে পারেননি।

১৯৮৪ সালে খালেদুর রহমান যশোর পৌরসভার নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন। পরের বছর তিনি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হন। ১৯৯০ সালে তিনি এরশাদ সরকারের শ্রম ও জনশক্তি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। সরকার পতনের পর ১৯৯১ সালে তাঁকে জেলে যেতে হয়। ১৯৯১ সালের শেষে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হন তিনি। ২০০৫ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে খালেদুর রহমানকে যশোর সদর আসন থেকে মনোনয়ন দেওয়া হলে তিনি সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন।