যাত্রীবাহী বাসে আবার পোশাককর্মীকে ধর্ষণ

গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন এক তরুণী (২২)। করোনাকালে চাকরি চলে গেলে কুমিল্লায় বাড়ি ফিরে যান। পাঁচ মাস পর আবার চাকরির সন্ধানে এসেছিলেন ঢাকায়। বাড়ি ফেরার পথে যাত্রীবাহী বাসে ওই তরুণী গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত মঙ্গলবার ভোরে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই তরুণীর মা বাদী হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মামলা করলে পুলিশ কুমিল্লার তিশা প্লাস নামের একটি যাত্রীবাহী বাসের চালক আরিফ হোসেন (২৬) ও তাঁর সহকারী (হেলপার) বাবু শেখকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে। বাসচালক আরিফ হোসেনের বাড়ি কুমিল্লা নগরের নেউরা এলাকায়। তাঁর সহকারীর বাড়ি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার কামিনারবাগ গ্রামে।


পুলিশ জানায়, কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ওই তরুণী সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের তিশা প্লাস বাসে ওঠেন। এ সময় তিনি কুমিল্লার শাসনগাছা নামবেন বলে বাসের চালক ও তাঁর সহকারীকে জানান। এরপর পথের বিভিন্ন স্থানে যাত্রীরা নেমে যান। কিন্তু বাসটি শাসনগাছায় ওই পোশাককর্মীকে না নামিয়ে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকার একটি হোটেলের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। এরপর ভোররাত চারটার দিকে বাসের দরজা, জানালা বন্ধ করে দিয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন চালক আরিফ হোসেন, তাঁর সহকারী বাবু শেখ ও বাসের সুপারভাইজার কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার আটচাইল গ্রামের মো. আলম (৩২)। পরে বাসচালকের সহকারী বাবু শেখ ওই পোশাককর্মীকে তাঁর বাসায় নিয়ে যান। সেখানে বাবু শেখ ও সুপারভাইজার আবার তাঁকে ধর্ষণ করে ঘর থেকে বের করে দেন। পরে ওই পোশাককর্মী বিষয়টি মুঠোফোনে তাঁর মাকে জানান। এরপর তাঁর মা এসে মেয়েকে নিয়ে সদর দক্ষিণ থানায় যান।

সদর দক্ষিণ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, এ ঘটনায় ওই পোশাককর্মীর মা বাদী হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে মেয়েটিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। পুলিশ বুধবার রাতে মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। বৃহস্পতিবার তাঁদের কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের বিচারক তাঁদের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
তরুণীর মা বলেন, ‘আমার মেয়ে গার্মেন্টসে কাজ করত। করোনার কারণে বাড়িতে ছিল। কাজের সন্ধানে ঢাকায় গিয়ে বোনের বাড়িতে উঠেছিল। সেখান থেকে ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে। আমি এর বিচার চাই।’
এর আগে ২০১৭ সালের ৬ মে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে চলন্ত বাসে এক নার্সকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। একই বছরের আগস্ট মাসে টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে এক তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ধামরাইয়ে এক পোশাককর্মীকে বাসের মধ্যে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়।