যাত্রীবাহী লঞ্চটিকে দেখতেই পাননি, দাবি কার্গো চালকের

ডুবে যাওয়া লঞ্চটি
ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের কয়লাঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনায় জড়িত কার্গো জাহাজের চালক দাবি করেছেন, তিনি যাত্রীবাহী লঞ্চটিকে দেখতেই পাননি। আজ বৃহস্পতিবার মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় কার্গোটিকে আটক করার পর নারায়ণগঞ্জে আনার পথে চালক ওয়াহিদুজ্জামান সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় নোঙর করা অবস্থায় এসকেএল-৩ নামের কার্গোটি আটক করে কোস্টগার্ড। এ সময় কার্গোর চালকসহ ১৪ জনকে আটক করা হয়। কোস্টগার্ড কার্গো ও আটক ব্যক্তিদের নারায়ণগঞ্জ নৌ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। নৌ পুলিশ কার্গো ও আটক ব্যক্তিদের নিয়ে নারায়ণগঞ্জের দিকে রওনা হয়।

পথে কার্গোর চালক ওয়াহিদুজ্জামান দাবি করেন, ‘লঞ্চটি আমার বাম পাশে ছিল। আমি লঞ্চটিকে দেখতেই পাইনি। ধাক্কা লাগার পর বুঝতে পারি, কিছুর সঙ্গে লেগেছে। তখন ভয়ে কার্গো চালিয়ে সামনের দিকে যেতে থাকি। চাঁদপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় কার্গো নিয়ে ঘুরেছি। পরে কার্গোর ওপরের অংশের নীল রং বদলে ছাই রং করে ফেলা হয়। নিচের অংশে আর রং করা হয়নি। ওপরে রং করায় কার্গোর নামটি ঢেকে যায়।’

আরও পড়ুন

এর আগে কোস্টগার্ড পাগলা স্টেশনের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট আশমাদুল ইসলাম বলেন, যাত্রীবাহী লঞ্চটিকে ধাক্কা দেওয়ার পর দ্রুত কার্গো জাহাজটি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় চলে যায়। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ পর ঝড় শুরু হয়। কিন্তু ঝড়ের মধ্যেও কার্গোটি থামেনি। দ্রুত গতিতে কার্গোটি পালাতে থাকে। এরপর আটক ঠেকাতে কার্গোটির রং দ্রুততম সময়ের মধ্যে বদলে ফেলা হয়। বদলে ফেলা কার্গোটি গজারিয়ার কোস্টগার্ড স্টেশনের কাছাকাছি নোঙর করে রাখা হয়। সেখান থেকে কার্গো জাহাজ এসকেএল-৩ আটক করা হয়।

গত রোববার সন্ধ্যার দিকে শীতলক্ষ্যা নদীর কয়লাঘাট এলাকায় জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যায় যাত্রীবাহী লঞ্চ সাবিত আল হাসান। ওই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

এই ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে কার্গো জাহাজের চালকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানায় মামলা করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তবে মামলায় কার্গো জাহাজ, এর চালক বা মালিক; কারোই নাম উল্লেখ করা হয়নি বলে জানান বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা।

এজাহারে কেন কার্গো জাহাজ এসকেএল-৩ এর নাম নেই, জানতে চাইলে মামলার বাদী বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা বাবুলাল বৈদ্য বলেন, ভিডিও ফুটেজে কোথাও ওই জাহাজের নাম দেখা যায়নি। নিশ্চিত না হওয়ায় অজ্ঞাত কার্গো জাহাজের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তদন্তে অভিযুক্ত কার্গো জাহাজের নাম বেরিয়ে আসবে।

তবে ঘটনার পর থেকে পুলিশ, লঞ্চ মালিক সমিতি ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধাক্কা দেওয়া কার্গোটির নাম এমভি এসকেএল-৩, যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর এম-০১-২৬৪৩। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাহাজটির মালিক বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়ের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এসকে লজিস্টিকস।