যানজট নিরসনের নামে ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়

ভোমরা স্থলবন্দর
ফাইল ছবি

সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর এলাকায় সরকারের অধিগ্রহণ করা জমিতে ট্রাক রেখে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভোমরা স্থলবন্দর যানজট নিরসনের নামে একটি কমিটি করে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিটি ট্রাক থেকে ৫০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন ৩০০-৩৫০ ট্রাক থেকে এভাবে চাঁদা আদায় করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ভোমরা স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য জমি অধিগ্রহণ করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। যানজট নিরসনের কথা বলে ওই জমিতে চালকদের জোর করে ট্রাক রাখতে বাধ্য করা হয়। এ জন্য ট্রাকপ্রতি ৫০ টাকা নেওয়া হয়।

ভোমরা স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি নামে একাধিক সংগঠন রয়েছে। একটি সমিতির সভাপতি রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রমজান আলী এবং সাতক্ষীরা জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ করেন, যানজট নিরসন কমিটির নামে নীরবে এই চাঁদা আদায় করছেন স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি নামের আরেকটি সংগঠনের সভাপতি কামরুল ইসলাম গাজী, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, ভোমরা স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের সভাপতি ও শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আজিবুর রহমানসহ কয়েকজন। বারবার নিষেধ করা শর্তেও তাঁরা কারও কাছ থেকে কোনো অনুমতি না নিয়েই প্রতিটি ট্রাক থেকে চাঁদা আদায় করছেন। প্রতিদিন ১৫ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগও দেওয়া হয়েছে।

ভোমরা স্থলবন্দর এলাকায় গেলে সেখান কয়েকজন বাংলাদেশি ট্রাকচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চাঁদা না দিলে তাঁদের নানা ধরনের হয়রানি করা হয়। চাঁদা দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।

জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, এর আগেও এই চক্র ট্রান্সপোর্ট মালিক সমবায় সমিতির নামে সেখানে চাঁদা আদায় করত। একপর্যায়ে ট্রাক মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিলে তা বন্ধ হয়। আবার ভোমরা স্থলবন্দর যানজট নিরসন কমিটির নামে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে কয়েক মাস ধরে। এ বিষয় অভিযোগ বিভিন্ন দপ্তরে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ভোমরা স্থলবন্দর শ্রমিক লীগের সভাপতি আজিবুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভোমরা বন্দরে যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনের লক্ষ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষের পরামর্শে তাঁরা কয়েকজন কাজ করে যাচ্ছেন। তবে চাঁদা তোলার অনুমতি রয়েছে কি না, তা তিনি জানেন না। ভোমরা স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি কামরুল ইসলাম গাজীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানতে পারবেন।

যোগাযোগ করা হলে কামরুল ইসলাম গাজী বলেন, অধিগ্রহণ করা জমি তাঁরা সংস্কার করছেন। এ ছাড়া যানজট নিরসনে এলাকাবাসী তাঁদের ওপর দায়িত্ব দেওয়ায় তাঁরা ট্রাকপ্রতি ৫০ টাকা করে চাঁদা নিয়ে থাকেন।

জানতে চাইলে ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মাহমুদুল হাসান জানান, এভাবে টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। এ ব্যাপারে তাঁদের কিছু জানা নেই।