যুক্তরাজ্যের ভিসা কার্যক্রম জরুরি সেবার আওতায় চালু রাখার দাবি

লকডাউনে যুক্তরাজ্যের ভিসা কার্যক্রম জরুরি সেবার আওতায় চালু রাখার দাবিতে শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন। মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে।
ছবি : প্রথম আলো

লকডাউন চলাকালে যুক্তরাজ্যের ভিসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘আইওএম’ ও ‘ভিএফএস গ্লোবাল’-এর কার্যক্রম জরুরি সেবার আওতায় চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ও ভর্তির অপেক্ষায় থাকা শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা এ দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শিক্ষার্থী শাহরিয়ার জামান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাহরিয়ার জামান বলেন, প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যে যান। তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ যান সেপ্টেম্বর সেশনে। কোভিড পরিস্থিতির কারণে যুক্তরাজ্যে গমনেচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভিসা সেবাদানকারী দুটি প্রতিষ্ঠান আইওএম এবং ভিএফএস গ্লোবাল অনেক দিন বন্ধ ছিল। প্রতিষ্ঠান দুটি মাসখানেক আগে আবার তাদের কার্যক্রম শুরু করে। এ অবস্থায় যদি লকডাউনে এই দুই প্রতিষ্ঠানকে জরুরি সেবার আওতাধীন করে কার্যক্রম চালু না রাখা হয়, তাহলে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর জীবন হুমকির মুখে পড়বে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দুটি প্রতিষ্ঠানে শত শত শিক্ষার্থীর পাসপোর্ট জমা দেওয়া আছে এবং অনেকেই পাসপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। এ পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠান দুটি চালু না রাখলে অনেকের ভর্তির সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, প্রতিবছর প্রায় ৯০ হাজার শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যান। এর মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি যান সেপ্টেম্বর সেশনে। আগের লকডাউনগুলোর কারণে গত জানুয়ারি ও মে সেশনের অধিকাংশ শিক্ষার্থী তাঁদের ভর্তির কাগজপত্র জমা দিতে পারেনি। এই লকডাউনের কারণে যদি আবারও ভিএফএস বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করবে।

লকডাউনের সময় জরুরি সেবার আওতায় ভিসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থী পাঁচ-ছয় মাস ধরে অনলাইনে ক্লাস করছেন। এতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অনেক সময় লোডশেডিং ও নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে ক্লাস করা সম্ভব হচ্ছে না। ছাত্ররা লাখ লাখ টাকা টিউশন ফি এরই মধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এত দিন অপেক্ষা করার পর যদি ভিসা না হয়, তাহলে টিউশন ফির ২৫ শতাংশ কেটে নেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এমন অনেক শিক্ষার্থী আছেন, যাঁরা এর মধ্যে পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন এবং কিছুদিনের মধ্যেই তাঁদের ভিসা হবে। এ অবস্থায় ভিএফএস গ্লোবাল বন্ধ হলে শিক্ষার্থীরা তাঁদের পাসপোর্ট পাবেন না।

প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভিসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাঁরা পরিবার নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা আলাদাভাবে প্রত্যেক সদস্যের জন্য স্বাস্থ্যবিমার ফি দিয়েছেন। ওই স্বাস্থ্যবিমার জন্য লক্ষাধিক টাকার মতো দিতে হয়েছে। এ অবস্থায় তাঁরা যদি তাঁদের কাঙ্ক্ষিত সেশনে যেতে না পারেন, সে ক্ষেত্রে তাঁদের নতুন করে আবারও এই স্বাস্থ্যবিমার ফি দিতে হবে। যা অনেকের জন্যই অসম্ভব। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর কথা ভেবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিষ্ঠান দুটির কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দিলে বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হতো না।