যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের অভিযোগ

গ্রাম্য সালিসে এক মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের অভিযোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন মুক্তিযোদ্ধারা। মঙ্গলবার দুপুরে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রাঙ্গণে।
ছবি: আবদুল মোমিন

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় একটি গ্রাম্য সালিসে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার হরিরামপুরে মানববন্ধন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচি শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে স্মারকলিপিও দেন তাঁরা। তবে মারধরের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন যুবলীগ নেতা রাজ্জাক।

স্মারকলিপি এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৮ জুন) বিকেলে এক দম্পতির দাম্পত্য কলহ সমাধানে জেলা সদরের ভাড়ারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বাড়িতে সালিসের আয়োজন করা হয়। সেখানে হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান, সিঙ্গাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুর রাজ্জাক, ভাড়ারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কাদের, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন আহমেদসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। সালিস চলাকালে দুই পক্ষের মধ্যে তর্কবিতর্কের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আবদুর রাজ্জাক ও তাঁর সহযোগীরা বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলামকে কিল, ঘুষি ও কাঠের চেয়ার দিয়ে আঘাত করেন। এতে আহত শহীদুল ইসলামকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে হরিরামপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রাঙ্গণে মানববন্ধনের আয়োজন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এতে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আওলাদ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা অসীত কুমার নাগ, আবুল হাশেম, শামসুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন। এ সময় তাঁরা যুবলীগের নেতা আবদুর রাজ্জাকের শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে যুবলীগ নেতা ও কাউন্সিলরের শাস্তির দাবিতে মুক্তিযোদ্ধারা ইউএনও মো. সাইফুল ইসলামের কাছে স্মারকলিপি দেন।

অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কাদের বলেন, সালিসে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। কিছু যুবক উত্তেজিত হন। পরে সালিসে মীমাংসা হয়নি।

জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক বলেন, সালিসে তিনি উপস্থিত থাকলেও মারধর বা লাঞ্ছিতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তিনি বলেন, ‘সালিসে দুই পক্ষের কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ছেলের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, তাঁদের কেন মারধর বা লাঞ্ছিত করা হবে? রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।’

ইউএনও মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, স্মারকলিপি তিনি পেয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।