যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

স্ত্রীর কাছে শ্বশুরবাড়ি থেকে যৌতুক এনে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন স্বামী। কিন্তু স্ত্রী স্বামীর দাবি অনুযায়ী যৌতুক এনে দিতে পারেননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী তাঁকে নির্যাতন করেন। ওই নির্যাতনে তিনি মারা গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা গেছেন। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর ভাশুরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার জয়চণ্ডী ইউনিয়নের দানাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। মারা যাওয়া গৃহবধূ ওই গ্রামের ইয়াইদ আলীর স্ত্রী মুন্নি বেগম (২০)। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার মুন্নির বড় ভাই কুলাউড়া থানায় হত্যা মামলা করেছেন।

মামলার এজাহার, নিহত মুন্নির স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে দানাপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হালিমের মেয়ে মুন্নিকে একই গ্রামের মৃত শফত আলীর ছেলে ইয়াইদ আলী (২৫) বিয়ে করেন। ইয়াইদ বেকার ছিলেন। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে তিনিসহ তাঁর পরিবারের লোকজন প্রায়ই মুন্নির ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে মুন্নি মাঝেমধ্যে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে স্বামীকে দিতেন। তাঁদের তিন মাস বয়সী এক কন্যাসন্তান রয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে আরও জানা গেছে, যৌতুকের দাবিতে ইয়াইদ গত রোববারও মুন্নিকে মারধর করেন। এতে মুন্নি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার ইয়াইদ ও মুন্নির বাবার বাড়ির লোকজন তাঁকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি ঘটায় সেখান থেকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত আটটার দিকে তিনি মারা যান। খবর পেয়ে রাতেই কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদেক কাওছার দস্তগীর ও কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে মুন্নির বড় ভাই মঈন উদ্দিন বাদী হয়ে ইয়াইদ ও ইয়াইদের বড় ভাই এরশাদ আলীকে (২৮) আসামি করে মামলা করেন। পরে পুলিশ ইয়াইদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁর বড় ভাই এরশাদকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।

মুন্নির বড় ভাই মঈন উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, তাঁর বোনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার সময় ইয়াইদ তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। চিকিৎসকেরা অবস্থা আশঙ্কাজনক জানালে সেখান থেকে তিনি (ইয়াইদ) কৌশলে পালিয়ে যান।

মামলাটি তদন্ত করছেন কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহীন আহমদ। তিনি বুধবার বেলা তিনটার দিকে মুঠোফোনে বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া এরশাদকে আদালতের মাধ্যমে মৌলভীবাজারের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইয়াইদ পলাতক। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মুন্নির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার জেলা সদরে অবস্থিত ২৫০ শয্যার হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

যৌতুকের জন্য মুন্নিকে নির্যাতন করার অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য ইয়াইদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।