রংপুরে রাতভর বৃষ্টিতে নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা

বৃষ্টিতে নগরের বিভিন্ন পাড়া–মহল্লার সড়কগুলো তলিয়ে গেছে। আজ সকালে কোতয়ালী থানা সড়কের মুলাটোল এলাকায়
ছবি: মঈনুল ইসলাম

রংপুরে গতকাল রোববার রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। এতে শহরের নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। কিছু কিছু এলাকার বসতবাড়িতে পানি উঠেছে। তবে পানি নেমে যাওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নগরবাসী।

রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, গতকাল সন্ধ্যা থেকে ১২ ঘণ্টায় ২৬৫ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ বৃষ্টি থেমে থেমে আরও হতে পারে। এদিকে রংপুরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ঘাঘট নদের পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

আজ সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের মুলাটোল, গোমস্তাপাড়া, নিউ সেনপাড়া, মুন্সিপাড়া, ধাপ সাগরপাড়া, মেডিকেল পূর্বগেট, নূর পুর, নিউ জুম্মাপাড়া, হনুমানতলা, জলকর, নীলকণ্ঠ, খলিফাপাড়া, আদর্শপাড়া, বাবু খা, কামালকাছনা এলাকাসহ ৩৩টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। শত শত পরিবার পানিবন্দী।

শহরের গোমস্তাপাড়া এলাকার বাসিন্দা শামীম মিয়ার ভাড়া বাড়িতে পানি ওঠায় তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। ট্রাকে মালামাল তোলার সময় তিনি বলেন, ‘নিচতলা বাড়িতে পানি ওঠায় খুব বিপদে পড়েছি। মালামাল নষ্ট হওয়ার উপক্রম। ঘরে পানি ওঠায় রাতভর জেগে থেকেছি। এখানে এভাবে থাকা সম্ভব নয়।’

কিছু কিছু এলাকার বসতবাড়িতে পানি উঠেছে। তাই বাড়ি থেকে মালামাল নিয়ে অন্য এলাকায় যাচ্ছেন এক ভাড়াটিয়া
ছবি: প্রথম আলো

এদিকে মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা জ্যোৎস্না বেগম জানান, তাঁর ঘরের মধ্যে হাঁটুসমান পানি ওঠায় আসবাবপত্র নষ্ট হওয়ার উপক্রম। এখন রোদ ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কেননা, এ পানি অন্য কোথাও সরে যাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই।

এদিকে গতকাল রাত থেকে নগরের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। এতে নগরবাসীর দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে। এদিকে পর্যটনপাড়ায় দেখা যায় সেখানকার নর্দমাগুলো উপচে গেছে পানিতে। ময়লা পানির মধ্যে মানুষকে চলাফেরা করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া শ্যামাসুন্দরী খালও পানিতে উপচে গেছে। প্রতিটি নর্দমার সংযোগ খালের মুখে পানি থৈ থৈ করছে। বিভিন্ন জায়গায় পলিথিন, ময়লা-আবর্জনার স্তূপ আর কচুরিপানার কারণে শ্যামাসুন্দরীতে পানির প্রবাহ বিঘ্ন হতে দেখা গেছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) মহানগর কমিটির সভাপতি প্রথম আলোকে বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে নগরবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। সিটি করপোরেশনকে দ্রুত পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। না হলে প্রতিবছর এভাবে জলাবদ্ধতা দেখা দেবে আর নগরবাসী দুর্ভোগে পড়বেন

জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, নগরের নিচু এলাকাগুলোতে মূলত জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক থেকে বাসাবাড়ি নিচু হয়ে পড়েছে এ কারণে জলাবদ্ধতা হচ্ছে। তবে শ্যামাসুন্দরী খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এরপরও নগরের জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।