রাজনগরে দোকান বন্ধ রেখে সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয় স্থানান্তরের প্রতিবাদ

রাজনগর বাজারের ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন ও প্রতীকী ধর্মঘটের আয়োজন করেন
ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের রাজনগরে সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয় অন্যত্র স্থানান্তরের প্রতিবাদে এক ঘণ্টা দোকানপাট বন্ধ রেখে প্রতীকী ধর্মঘট এবং মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজনগর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ মানববন্ধনে স্থানীয় ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন রাজনগর সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান খান। এ সময় সেখানে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়ছল আহমদ, ব্যবসায়ী দেওয়ান মিছবাহুল মজিদ কালাম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান খয়রুল মজিদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাহেদুজ্জামান আনসারী, ব্যবসায়ী ওবায়েদুর রহমান, নিবারণ ঘোষ প্রমুখ। এ সময় দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত রাজনগর উপজেলা সদরের সব দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজনগরে সাবরেজিস্ট্রি কার্যক্রম চালু হওয়ার ৬৯ বছর পার হলেও সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয়ের নিজস্ব কোনো ভবন নেই। রাজনগরে ১৯৫৩ সালে সাবরেজিস্ট্রি কার্যক্রম চালু হয়েছে। তখন বাজারের আশপাশের বিভিন্ন স্থাপনা ভাড়া নিয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালানো হয়। সবশেষ ১৯৯২ সালে উপজেলা পরিষদ এলাকায় আইন মন্ত্রণালয়ের ভবনের কয়েকটি কক্ষ নিয়ে অফিসের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি অফিস অন্যত্র স্থানান্তর করার কাজ শুরু করা হয়েছে। এ নিয়ে ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের ভেতর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে দলিললেখকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কলম বিরতি পালন করছেন।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, উপজেলা পরিষদসংলগ্ন এলাকায় ভবন থাকা সত্ত্বেও ভাড়ায় অন্যত্র অফিস নেওয়ার চেষ্টা চলছে। বর্তমান উপজেলা পরিষদ এলাকা থেকে সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয় অন্য কোথাও স্থানান্তর করা হলে উপজেলা সদরের ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দার কবলে পড়বে।

রাজনগর দলিল লেখক সমিতির সহসভাপতি হাসান আহমদ বলেন, উপজেলা পরিষদ এলাকাতেই ব্যাংক রয়েছে। এখন সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয় দূরে কোথাও নেওয়া হলে জমির ক্রেতা-বিক্রেতাসহ বিভিন্ন মানুষ টাকা লেনদেন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় পড়বেন। নতুন জায়গায় দলিললেখকদের বসার পরিবেশ থাকবে না। তাই বর্তমান অফিসের আশপাশেই কোথাও ভবন নেওয়ার জন্য তিনি দাবি জানান।

দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত রাজনগর উপজেলা সদরের সব দোকানপাট বন্ধ ছিল
ছবি: প্রথম আলো

রাজনগর বাজারের ব্যবসায়ী ওবায়েদুর রহমান বলেন, সাবরেজিস্ট্রারের সঙ্গে কয়েক দফা কথা বলা হয়েছে। কিন্তু অফিস স্থানান্তরের কাজ চালানো হচ্ছে। দাবি না মানলে প্রয়োজনে ব্যবসায়ীসহ সর্বসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলনে শুরু করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজনগর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার আজমেরী নির্ঝর প্রথম আলোকে বলেন, গত মাসে মন্ত্রণালয় থেকে চিঠির মাধ্যমে বর্তমান ভবন থেকে সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয় সাময়িক স্থানান্তরের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশনা অনুযায়ী কলেজ রোডে একটি নির্মাণাধীন ভবনে অফিস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বর্তমান ভবনটি স্যাঁতসেঁতে ও ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নষ্ট হচ্ছে। সাবরেজিস্ট্রি অফিস ঘিরে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। অফিস স্থানান্তর হলে ব্যবসায়ীরা সাময়িক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, এটা সত্যি। তবে স্থায়ী ভবনের জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে।