‘রাজনৈতিক চাপে’ আসেন না মেয়র, অপসারণ দাবি

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মেয়র দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত। এতে দাপ্তরিক কাজে চলছে অচলাবস্থা।

মেয়র রফিকুল আলম জজের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন। গতকাল বিকেলে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভা চত্বরে।
ছবি: প্রথম আলো

চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ছেংগারচর পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলমকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আয়োজকদের ভাষ্য, মেয়র দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত। এতে দাপ্তরিক কাজে চলছে অচলাবস্থা। তবে সাবেক সাংসদ মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন রফিকুল বলছেন, রাজনৈতিক চাপে তিনি এলাকায় যেতে পারছেন না।

মঙ্গলবার বিকেলে পৌরসভা চত্বরে মানববন্ধন হয়। ছেংগারচর বাজার বণিক সমিতি, ছেংগারচর পৌর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। বক্তৃতা করেন ছেংগারচর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান কাইয়ুম চৌধুরী ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রতন ফরাজী, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী মিয়াজী, ছেংগারচর পৌর যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক জামান সরকার, ছেংগারচর বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিন ফরাজী, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মহসিন মিয়া ও মাহবুবুল আলম প্রমুখ। অংশগ্রহণকারীদের বেশির ভাগই চাঁদপুর-২ আসনের বর্তমান সাংসদ নুরুল আমিনের অনুসারী।

আওয়ামী লীগ নেতা হাসান কাইয়ুম চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন বক্তা অভিযোগ করে বলেন, মেয়র রফিকুল আলম সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূতভাবে আড়াই বছর ধরে তাঁর কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তিনি বর্তমানে ঢাকায় বসবাস করছেন। এলাকাবাসী ও পৌরসভার লোকজনের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ নেই। তাঁর এই দায়িত্বহীনতায় পৌরসভার দাপ্তরিক কাজে অচলাবস্থা চলছে। থমকে আছে পৌরসভাটির উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, ব্যাহত হচ্ছে নাগরিক সেবা। এভাবে একটি পৌরসভা চলতে পারে না। এসব কারণে রফিকুল আলমকে মেয়রের পদ থেকে সরিয়ে অবিলম্বে পৌর প্রশাসক নিয়োগ এবং নতুন নির্বাচন দিতে হবে। এ দাবি মানা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।

পৌরসভার কর্মী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মেয়র রফিকুল আলম চাঁদপুর-২ আসনের সাবেক সাংসদ ও মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। গত সংসদ নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন পাননি। ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি নুরুল আমিন মনোনয়ন পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন। এর পর থেকে এলাকায় মেয়র রফিকুল আলমের অবস্থান দুর্বল। এ কারণে তিনি এলাকায় আসেন না। ফলে পৌরসভার দাপ্তরিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে প্যানেল মেয়র হিসেবে আবদুল মান্নান ব্যাপারী জরুরি কাজগুলো চালিয়ে নিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি এলাকায় যেতে চান। কিন্তু রাজনৈতিক চাপের কারণে যেতে পারছেন না। প্রশাসন উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলে তিনি অবশ্যই এলাকায় গিয়ে পৌরসভার দায়িত্ব পালন করবেন।