রাজবাড়ীতে সাংবাদিক প্রবীর শিকদারের নামে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলা

রাজবাড়ীতে সাংবাদিক প্রবীর শিকদারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজবাড়ী ১ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি করেন এক আইনজীবী। এর আগে গত জুলাই ও আগস্টে রাজবাড়ীতে তাঁর বিরুদ্ধে চারটি মানহানির মামলা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, রাজবাড়ীর পরিচিত আইনজীবী ও সাবেক জনপ্রতিনিধি এম এ খালেক ২৯ আগস্ট করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মারা যান। ১ সেপ্টেম্বর প্রবীর শিকদার নিজের ফেসবুকে এম এ খালেক সম্পর্কে একটি লেখা প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি এমন কিছু কথা লিখেছেন, যার মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে ইসলাম ধর্মের অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে।

এম এ খালেক রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সহসভাপতি। তিনি বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তিনি। দুবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন এম এ খালেক। একবার সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন।

প্রবীর শিকদার দৈনিক বাংলা ৭১, উত্তরাধিকার-৭১ নিউজ অনলাইন পত্রিকা ও উত্তরাধিকার নামের এক ত্রৈমাসিক পত্রিকার সম্পাদক। তাঁর বাড়ি রাজবাড়ীর পাশের জেলা ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের কানাইপুর সাহাপাড়া গ্রামে। তবে থাকেন রাজধানী ঢাকায়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রবীর শিকদার বলেন, তাঁর লেখায় কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়নি। এ ছাড়া সুনির্দিষ্টভাবে কারও নামও উল্লেখ করেননি তিনি। তবু কেউ কোনো কিছু নিজের কাঁধে তুলে নিলে তাঁর কিছু করার নেই।

রাজবাড়ী ১ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি করা হয় দণ্ডবিধির ২৯৫, ২৯৫-এ ও ২৯৮ ধারায়। মামলার বাদী জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান। আদালতের বিচারক লাবণী আক্তার মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আইনজীবী আনিসুর রহমান বলেন, প্রবীর শিকদার এর আগেও আইনজীবী এম এ খালেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন লেখা ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি নতুন এ লেখা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা সব প্রমাণ সংগ্রহ করে আদালতে উপস্থাপন করেছেন। জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ মামলা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এর আগে জুলাই ও আগস্টে প্রবীর শিকদারের বিরুদ্ধে রাজবাড়ীতে চারটি মানহানির মামলা হয়েছে। ১২ আগস্ট প্রবীর শিকদারের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। মামলা দুটির বাদী কালুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান এবং মদাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম রোকনুজ্জামান। ৫ আগস্ট পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মচারী মনোয়ার হোসেন একটি মামলা করেন। আর ২৯ জুলাই কালুখালী উপজেলার মাঝবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ইউপি সদস্য ও রতনদিয়া রজনীকান্ত মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের অফিস সহকারী ইউসুফ হোসেন অপর মামলাটি করেন।