রাজশাহী নগরে সর্বাত্মক লকডাউন বাড়ল এক সপ্তাহ

লকডাউন
প্রতীকী ছবি

রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার না কমায় চলমান সর্বাত্মক লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বুধবার রাত ৯টার দিকে জেলা সার্কিট হাউসে রাজশাহী নগরের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এক জরুরি সভা শেষে নগরে এ ঘোষণা দেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। লকডাউন ২৪ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত।

এর আগে ১০ জুন রাতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এক জরুরি সভা শেষে রাজশাহী নগরে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউন দেওয়ার ঘোষণা দেন বিভাগীয় কমিশনার মো. হুমায়ুন কবীর। সেই লকডাউন শুরু হয় ১১ জুন বিকেল ৫টা থেকে, শেষ হবে ১৭ জুন রাত ১২টায়। এর মধ্যে রাজশাহী নগরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু না কমায় আরও এক সপ্তাহ লকডাউন বাড়ানোর ঘোষণা এল।

সভা শেষে খায়রুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, শনাক্তের হার যেখানে ছিল, কমবেশি সেখানেই আছে। মৃত্যুর হারও কিন্তু আগের মতোই আছে। সবচেয়ে শঙ্কার বিষয় হচ্ছে, রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকার মধ্যে পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় ব্যাপকভাবে মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে এটা কখনো হয়নি। এখন একটা লকডাউন চলছে, এর সুফল পেতে আরও কিছু দিনের জন্য লকডাউনে যেতে হবে।

সবাইকে একটু কষ্ট হলেও বিধিনিষেধ মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘আমরা আশা করব রাজশাহী শহর ও জেলার সব মানুষ এটা বুঝবেন এবং আগামী কোরবানির ঈদ যেন আমরা পালন করতে পারি। তাই এই সাত দিন একটু কষ্ট হলেও মেনে নিতে হবে। জীবন বাঁচলে হয়তো পরিবারের মুখে হাসি থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ প্রশাসনের লোকসহ আমরা যেভাবে পারছি, মানুষের পাশে থাকছি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল, পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী, সিভিল সার্জন কাইয়ুম তালুকদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবুল সরকার প্রমুখ।

জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, ২৪ জুন রাত পর্যন্ত লকডাউন চলবে। আগের মতোই দোকানপাট, গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। শুধু চালু থাকবে জরুরি পরিষেবার পরিবহন ও ওষুধের দোকান। বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহী নগরসহ জেলায় সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল নিষিদ্ধ। অর্থাৎ, কর্তৃপক্ষের কোনো সনদ ছাড়া রাজশাহী জেলায় অন্য কোনো জেলা থেকে গণপরিবহন ঢুকতে পারবে না। রাজশাহী নগরের সঙ্গে উপজেলার যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন থাকবে। রাজশাহীর সঙ্গে অন্য জেলার যোগাযোগও বন্ধ থাকবে। এ কারণে জেলাও অঘোষিত লকডাউনের মধ্যে চলে আসছে। তবে লকডাউন বলতে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে শুধু মহানগর এলাকায়।

রাজশাহী নগরে অটোরিকশা চলাচলের বিষয়ে মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, রাজশাহীতে ভেতরে–ভেতরে অনেক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার থেকে পুলিশ আরও কঠোর অবস্থানে থাকবে। অটোরিকশাও চলবে না।
রাজশাহীতে ঈদের পর থেকে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর হারও। রাজশাহী মেডিকেলেও বাড়ছে মৃত্যুর হার। শয্যার তুলনায় রোগী ভর্তি রয়েছেন বেশি। এ অবস্থায় গত এক সপ্তাহের লকডাউনে তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। এ কারণে চলমান লকডাউন বৃদ্ধির ঘোষণা এল।