রাজশাহীতে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের বিক্ষোভ

বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যালস রিপ্রেজেন্টেটিভস অ্যাসোসিয়েশনের (ফারিয়া) রাজশাহী জেলা ও মহানগর শাখা এ কর্মসূচির আয়োজন করে
ছবি: শহীদুল ইসলাম

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির কয়েক প্রতিনিধিকে কোমরে রশি দিয়ে বেঁধে রাখার ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার সকালে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন। এর আগে গতকাল রোববার সকালে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ব্যবস্থাপত্রের ছবি তোলার অভিযোগ এনে ওষুধ কোম্পানির তিন প্রতিনিধিকে কোমরে রশি দিয়ে বেঁধে রাখার ঘটনা ঘটে।

আজ সকাল ১০টার দিকে বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যালস রিপ্রেজেন্টেটিভস অ্যাসোসিয়েশনের (ফারিয়া) রাজশাহী জেলা ও মহানগর শাখা এ কর্মসূচির আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন মহানগর কমিটির আহ্বায়ক নাজমুল সাকিব। এতে শতাধিক মেডিকেল প্রোমোটিং এক্সিকিউটিভ (এমপিই) অংশ নেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশে চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধের জোগান দেয় দেশীয় ওষুধ কোম্পানি। এখানে ২৫ হাজার কোটি টাকার বাজার আছে। ওষুধ খাত বিপুল পরিমাণ রাজস্ব দেয়। তা দিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন হয়। কিন্তু রামেক হাসপাতালের পরিচালক তাঁদের কোমরে রশি বেঁধে সব ওষুধ কোম্পানিকে অপমান করেছেন।

এখন থেকে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দেখে লাঠি নিয়ে তেড়ে এলে সেই লাঠি ভেঙে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন বক্তারা। তাঁরা বলেন, ওষুধ কোম্পানির তিন প্রতিনিধিকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখার ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালককে ১২ ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। তা না হলে প্রথমে রাজশাহীতে এবং পরে সারা দেশে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন তাঁরা।

এ ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালককে ১২ ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা
ছবি: শহীদুল ইসলাম

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ‘ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। তারাই এসে ক্ষমা চাইবে। ভুল ওরা করেছে।’

শামীম ইয়াজদানী অভিযোগ করে বলেন, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্যাড, খাতা-কলম বা এ ধরনের উপহার দেন। এর বিনিময়ে তাঁরা তাঁদের কোম্পানির ওষুধ লিখতে চাপ দেন। তাই কেউ কেউ সরকারি ওষুধের সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও ওই কোম্পানির ওষুধ লিখেন। দামি এসব ওষুধ কিনতে গরিব রোগীদের কষ্ট হয়। কোম্পানির প্রতিনিধিরা আবার হাসপাতালে এসে দেখেন ডাক্তার কোন ওষুধ লিখছেন। তাঁরা রোগীকে আটকে ব্যবস্থাপত্রের ছবি তোলেন। এমনভাবে তাঁরা দাঁড়ান কোনো রোগীর পাশ কাটিয়ে যাওয়ার উপায় নেই।

রশি দিয়ে বাঁধার বিষয়ে জানতে চাইলে শামীম ইয়াজদানী বলেন, ‘অনেক সময় আমি রেগে গিয়ে দায়িত্বরত আনসারদের বলি, “এই ওদের ধরো, বাঁধো—এ রকম। ” অতি উৎসাহী দুই–একজন আবার এই কাজটা করে ফেলেছে। এটা ঠিক হয়নি।’

রোগীদের আটকে ব্যবস্থাপত্রের ছবি তোলার কারণে রোববার সকালে ওষুধ কোম্পানির তিন প্রতিনিধিকে একসঙ্গে রশি দিয়ে বাঁধা হয়। হাসপাতালের দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা ওষুধ কোম্পানির তিন প্রতিনিধিকে বেঁধে রাখেন। তবে কিছুক্ষণ পর মুচলেকা নিয়ে তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।