রাজশাহীতে গুলি করে ও কুপিয়ে যুবককে হত্যা

হত্যা
প্রতীকী ছবি

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দুর্গম চরে গতকাল বুধবার রাতে গুলি করে ও কুপিয়ে এক যুবককে হত্যা করা হয়েছে। রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের চৌমাদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই যুবকের নাম ইব্রাহিম হোসেন (২৮)। তিনি ওই গ্রামের হাজি দেওয়ানের ছেলে। পুলিশ রাতেই লাশ উদ্ধার করেছে।

পদ্মা নদীর ওপারে চৌমাদিয়া গ্রামটির অর্ধেক অংশ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মধ্যে পড়েছে। এই চরে প্রায় এক মাস ধরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এরই জের ধরে হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসীর ভাষ্য। এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই দিন চারজন গুলিবিদ্ধ হন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন আরও চারজন।

পুলিশ জানিয়েছে, চৌমাদিয়া গ্রামের সেলিম দরজি ও দিদার বেপারীর জমি আছে পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানা এলাকার মধ্যে। এক মাস আগে সেলিম আগুন দিয়ে কলাবাগানের ভেতরে থাকা ঘাস পুড়িয়ে দিয়েছিলেন। তখন দিদারের গমখেতে আগুন ধরে যায়। বিষয়টি নিয়ে টানা কয়েক দিন উত্তেজনার পর ২৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর গতকাল রাতে খুন হন ইব্রাহিম।

বাঘা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল বারী বলেন, রাতে চৌমাদিয়া বাজারে মোশাররফ হোসেন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন ইব্রাহিম হোসেন। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন অতর্কিত তাঁদের ওপর হামলা চালায়। ইব্রাহিমকে প্রথমে গুলি করা হয়। এরপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কোপানো হয়। খবর পেয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) স্থানীয় সীমান্ত ফাঁড়ির সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ সময় তাঁরা মোশাররফকে উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে যান। গুরুতর আহত ইব্রাহিমকে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক ইব্রাহিমকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাত ১২টার দিকে পদ্মা নদী পার হয়ে চৌমাদিয়া যাচ্ছিলেন বাঘা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মামুনুর রশীদ। ২৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তিনি। তিনি বলেন, আগের মামলার আসামিদের ধরতে তিনি চরে গিয়েছিলেন। আসামিদের বাড়ি থেকে ১০ হাত দূরেই ভারতীয় সীমান্ত। ধরতে গেলেই তাঁরা ভারতের সীমানায় ঢুকে পড়েন।

স্থানীয় চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজিজুল আলম বলেন, ঘটনার পর থেকে পুরো চরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। একসময় এখানে লালচান ও পান্না বাহিনীর উত্থান ঘটেছিল। এখন আরেকটি নতুন বাহিনী গড়ে উঠেছে, যারা এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।