রাজাপুরে আ.লীগ নেতা হত্যার ঘটনায় মামলা, সরকারি কর্মকর্তাসহ আসামি ১২

আবদুল হালিম খলিফা
ছবি: সংগৃহীত

ঝালকাঠির রাজাপুরের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল হালিম খলিফাকে (৪৮) হত্যার ঘটনায় এক সেনাসদস্যসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্ত্রী সুখি বেগম গতকাল সোমবার রাতেই রাজাপুর থানায় এ মামলা করেন। মামলায় বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

গতকাল রাত আটটার দিকে চর হাইলাকাঠি গ্রামে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে রাজাপুর মঠবাড়ি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হালিম খলিফাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নারীসহ আরও তিনজন আহত হন। আবদুল হালিম খলিফা ওই এলাকার মৃত আবদুল মজিদ খলিফার ছেলে।

এ ঘটনায় নিহত হালিমের স্ত্রী সুখি বেগম বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৬–৭ জনকে আসামি করে রাতেই মামলা করেন। মামলায় বরিশালের বাবুগঞ্জের ইউএনও মো. আমীনুল ইসলাম ওরফে সুমনকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। আমীনুল ইসলাম চর হাইলাকাঠি গ্রামের মৃত আমজেদ সিকদারের ছেলে। এ ছাড়া তুহিন খান (২৩) নামের এক সেনাসদস্যকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে। তিনি হাইলাকাঠি গ্রামের মো. সেলিম খানের ছেলে। পুলিশ রাতেই মামলার তিন আসামি মন্টু খলিফা (৪৫), তাঁর স্ত্রী শিউলি বেগম ও সেলিম খান (৬০) নামের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

আরও পড়ুন

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, একই বাড়ির প্রতিপক্ষের সঙ্গে নিহতের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। কয়েক দিন ধরে এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এ ঘটনার জেরে গতকাল রাতে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে প্রতিপক্ষ মন্টু খলিফা, তুহিন খান, সেলিম খান, শাহিন, সোহাগ, সজীব, শামিম, শাওনসহ ২০–২৫ জন পূর্বপরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হালিম খলিফা ও বাদীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। খবর শুনে বোন ও ভগ্নিপতিকে রক্ষায় এগিয়ে আসলে লিটন ও সাইফুলকেও কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষরা।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নিহত হালিম খলিফা ও বরিশাল বাবুগঞ্জ ইউএনও মো. আমীনুল ইসলামের বাড়ি হাইলাকাঠি গ্রামে। মো. আমীনুল ইসলাম হালিম খলিফাদের কাছ থেকে ৫ শতক জমি ক্রয় করেন। বিএস রেকর্ডে আমীনুল ইসলামের নামে সোয়া ৬ শতাংশ জমি রেকর্ড হয়। হালিম খলিফাদের দাবি, ইউএনও আমীনুল ইসলামের নামে সোয়া এক শতক জমি বেশি রেকর্ড হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় অনেক সালিস হয়েছে।

ইউএনও মো. আমীনুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনার আমি কিছুই জানি না। জমি নিয়ে আমার সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই। আমি যাতে এলাকায় না যেতে পারি, সে জন্য চক্রান্ত করে আমাকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।’

রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত শহিদুল ইসলাম জানান, ‘মামলায় ইউএনওকে আসামি করা হয়েছে, এটা নাম–ঠিকানা যাচাই করে পরে জানতে পেরেছি। মামলায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’