রাতে ঘুমিয়ে থাকা নারীর লাশ সকালে মিলল নদীতে

রাতে একা ঘুমিয়ে ছিলেন নিজের ঘরে। সকালে বাড়ি থেকে ২০০ গজ দূরে সন্ধ্যা নদীতে মিলল বিধবা নারী মরিয়ম বেগমের (৩৫) লাশ। তাঁর মাথায় গুরুতর জখম থাকায় পুলিশের ধারণা, ওই নারীকে হত্যা করে তাঁর লাশ পাশের নদীতে ফেলে দিয়েছে দৃর্বৃত্তরা। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের উত্তর ভূঁতেরদিয়া গ্রামে গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে।

মরিয়ম ওই গ্রামের মৃত হারুন অর রশিদের স্ত্রী। হারুন রশিদ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে গত বছরের মার্চের মাঝামাঝিতে মারা যান। তাঁর দুই ছেলে, দুই মেয়ে রয়েছেন।
কয়েক প্রতিবেশী বলেন, মরিয়মের দুই ছেলে ঢাকায় চাকরি করেন। দুই মেয়ের বিয়ে হওয়ায় তাঁরা স্বামীর বাড়িতে থাকেন। ছোট ছেলে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আসিফকে নিয়ে তিনি স্বামীর ভিটায় থাকতেন।

প্রতিবেশী জাহানারা বেগম জানান, ছেলে আসিফ বুধবার বিকেলে পাশের উপজেলা গৌরনদীর শরিকল গ্রামে বোনের বাড়িতে বেড়াতে যায়। রাতে মরিয়ম ঘরে একাই ছিলেন। একসঙ্গে স্কুলে যাওয়ার জন্য সহপাঠী জয় আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আসিফকে ডাকতে তাদের বাড়িতে যায়। দরজা বন্ধ থাকায় এবং ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে সে ঘরের সামনে অপেক্ষা করতে থাকে।

জাহানারা বেগম আরও বলেন, জয় তাঁকে (জাহানারা) দেখে জানায়, আসিফ ও তার মাকে ডেকে কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। এ সময় তিনি (জাহানারা) ঘরের পেছনে গিয়ে সেখানকার দরজা খোলা দেখেন। বাইরে মরিয়মের পায়ের স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখেন। ঘর থেকে নদীর দিকে যাওয়ার পথে ছোপ ছোপ রক্ত পড়ে থাকতে দেখে জাহানারার সন্দেহ হয়। এসব দেখে তিনি চিৎকার দিয়ে প্রতিবেশীদের জড়ো করেন। পরে তাঁরা ২০০ গজ দূরে সন্ধ্যা নদীর তীরে মরিয়মের লাশ দেখতে পান।

কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূরে আলম ব্যাপারী জানান, খবর পেয়ে তিনি ও বাবুগঞ্জ থানার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে মরিয়মের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, মরিয়মের মাথায় গুরুতর জখম থাকায় প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে শক্ত কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে এবং এটি একটি হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডে একাধিক দুর্বৃত্ত অংশগ্রহণ করেছে বলেও ধারণা করছেন তাঁরা। হত্যাকাণ্ডের আগে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কি না, তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া নিশ্চিত হওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন ওসি। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। এর পেছনে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।