রাতে ফোন পেয়ে বেরিয়ে যান, সকালে সেতুর নিচে মেলে লাশ

প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার গুণধর গ্রামের টগবগে তরুণ রেদওয়ান আহম্মেদ (২৮)। চাকরি করেন ঢাকার নবাবগঞ্জে একটি জুতার কারখানায়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি ঢাকা থেকে বাড়িতে এসেছিলেন। বাড়ি এসেই বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ঘোরাঘুরি, আড্ডা শেষে রাতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন নিজ ঘরে। আজ শুক্রবার দুপুরে পাশের জয়কা ইউনিয়নের কিশোরগঞ্জ-মরিচখালী সড়কের পানাহার গ্রামে সেতুর নিচ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সকাল সাতটার দিকে ঘরে গিয়ে দেখি ছেলে নাই। ভেবেছি রাতে গিয়ে কোনো বন্ধুর বাড়িতে হয়তো ঘুমিয়েছে। এর মধ্যেই প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পাই, সেতুর নিচে এক যুবকের লাশ পড়ে আছে। গিয়ে দেখি, সে লাশ আমার রেদওয়ানের।
রুবিয়া আক্তার, রেদওয়ানের মা

নিহত রেদওয়ান করিমগঞ্জ উপজেলার গুণধর ইউনিয়নের গুণধর গ্রামের মৃত আমিনুল ইসলামের ছেলে। ছেলে হারিয়ে রেদওয়ানের মা রুবিয়া আক্তার দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ছেলে সারা দিন ভালো ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা থেকে বাড়ি এসে বাকিটা দিন বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ঘোরাঘুরি-আড্ডাতেই কাটিয়েছে। রাত ১০টার দিকে বাড়িতে এসে ঘুমানোর পরপরই কে বা কারা আবার ফোন করে আবার তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, ‘সকাল সাতটার দিকে ঘরে গিয়ে দেখি ছেলে নাই। ভেবেছি রাতে গিয়ে কোনো বন্ধুর বাড়িতে হয়তো ঘুমিয়েছে। এর মধ্যেই প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পাই, সেতুর নিচে এক যুবকের লাশ পড়ে আছে। গিয়ে দেখি, সে লাশ আমার রেদওয়ানের।’

লাশের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে সেতুর নিচে যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন করিমগঞ্জ থানায় খবর দেন। পুলিশ বেলা একটার দিকে সেখানে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। নিহত রেদওয়ানের লাশের পাশ থেকে কয়েক জোড়া স্যান্ডেল, কোমল পানীয়র তিনটি প্লাস্টিকের বোতল ও একটি মুঠোফোন পাওয়া যায়। উদ্ধারকৃত মুঠোফোনটি রেদওয়ানের বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত রেদওয়ানের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, বোঝা যাচ্ছে না এটা হত্যা নাকি অপমৃত্যু। তিনটি প্লাস্টিকের বোতলের মধ্যে খালি একটি বোতলে কীটনাশক বা এ রকম কিছু ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। অপরদিকে লাশের বুকে-পেটে যে কালো দাগ হয়ে আছে, সেগুলো বজ্রপাতের আঘাতের মতো মনে হচ্ছে। আবার মাথার আঘাতটি ইটের আঘাতের মতো মনে হচ্ছে। তাঁরা সবকিছু খতিয়ে দেখছেন। তবে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।