রানা প্লাজায় নিহতদের স্মরণ, সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি

রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে ঢাকা জেলা পুলিশের ফুলেল শ্রদ্ধা। শনিবার দুপুরে সাভারে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভের পাশে
ছবি: প্রথম আলো

সাভারে রানা প্লাজা ধসে নিহত শ্রমিকদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আহত শ্রমিক, নিহত শ্রমিকদের আত্মীয়স্বজন ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। আজ শনিবার সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে নির্মিত অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এর আগে সকাল সাতটায় রানা প্লাজা ভবন ধসের ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, নিহত ও আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসাসহ ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে থেকে শুরু হয়ে বাজার বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে আবার রানা প্লাজার সামনে এসে শেষ হয়।

তাঁদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো—২৪ এপ্রিলকে জাতীয় শ্রমিক শোক দিবস ঘোষণা, রানা প্লাজার সামনে স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, রানা প্লাজার জমি সরকারিভাবে অধিগ্রহণ করে বহুতল ভবন নির্মাণ এবং সেখানে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন।

রানা প্লাজার ১ হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় ১ হাজার ১৩৮টি গোলাপ ফুল দিয়ে তৈরি পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পরে পর্যায়ক্রমে গার্মেন্টস শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ, ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ কাউন্সিল, শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ), শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ, গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ সংহতি শ্রমিক ফেডারেশনসহ অন্যান্য সংগঠন নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায়।

রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ করে মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়। শনিবার দুপুরে সাভারে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভের পাশে
ছবি: প্রথম আলো

ওই ঘটনায় নিখোঁজদের স্মরণে রানা প্লাজার সামনে কাঁদতে দেখা যায় অনেক স্বজনকে। পাশাপাশি সহকর্মীদের শ্রদ্ধা জানাতে এসে আহত ও পঙ্গু শ্রমিকেরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, রানা প্লাজা ধসের ঘটনার ৭ বছর পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এ ঘটনার বিচারকাজ শেষ হয়নি। প্রতিশ্রুতিমতো দেওয়া হয়নি শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ। রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় অনেক শ্রমিকের জীবন অন্ধকারে চলে গেছে। সরকার তাঁদের নামমাত্র কিছু ক্ষতিপূরণ দিলেও অনেক পরিবার এখনো মানবেতর জীবনযাপন করছে।

এদিকে সকাল থেকে রানা প্লাজার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়। অস্থায়ী বেদির সামনে কাউকে বেশি সময় অবস্থান করতে দেওয়া হয়নি। শ্রদ্ধা জানানো শেষে বেদির সামনে থেকে লোকজনদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। বেলা একটার দিকে পুলিশ সেখান থেকে চলে যায়।