রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধে জড়িত মন্ত্রণালয় ও বিজেএমসির কর্মকর্তারা: সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ

‘রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে কোটি কোটি টাকা লোকসানের মূল কারণ কাঁচা পাট কেনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরে অনিয়ম ও দুর্নীতি। এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) কর্মকর্তারা। অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার ফলে পাটকল বন্ধ হলেও এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা এখনো চাকরিতে বহাল রয়েছেন। আর মাঝখান থেকে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ৫০ হাজার শ্রমিক।’ শনিবার বিকেলে খুলনার ফুলতলা ও যশোরের রাজঘাট এলাকার মিলনস্থলে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে এসব অভিযোগ করেছেন শ্রমিকনেতা-কর্মীরা।

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বিরাষ্ট্রীয়করণের সিদ্ধান্ত বাতিল, দ্রুত সব পাটকল চালু ও আধুনিকায়ন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ, পাটকল রক্ষা আন্দোলনের নেতাদের নামে করা মামলা প্রত্যাহারসহ ১৪ দফা দাবিতে সমাবেশটি করে পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকারি খাতের পাটকলসহ বিভিন্ন কলকারখানা লোকসানে রয়েছে। খাতগুলো বন্ধ করে দেবে, সরকারের এমন সিদ্ধান্ত শ্রমিক-কৃষক, তথা জনগণের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। এই লোকসান হয় মূলত মাথাভারী প্রশাসন, লুটপাট ও অবাধ দুর্নীতির কারণে।

শ্রমিকনেতা-কর্মীরা বলেন, পাটশিল্পে বছরের পর বছর লোকসান হচ্ছে, সরকার এমন যুক্তি দেখিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। যদিও অর্থের কোনো সংকট নেই, বরং রাজনৈতিক সদিচ্ছার দারুণ অভাবই পাটশিল্পে লোকসানের প্রধান কারণ। অর্থ ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বিজেএমসির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ভ্রান্তনীতি, লুটপাট, দুর্নীতির দায় শ্রমিকদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে ২৫টি পাটকল বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। আর মোক্ষম সময় হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে করোনাকালকে। অবিলম্বে পাটকলগুলো চালুর দাবিও জানান তাঁরা।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শ্রমিকনেতা কামরুল ইসলাম। প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন পরিষদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আ ফ ম মহসিন। অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন বাম গণতান্ত্রিক জোট ও গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা সমন্বয়ক মুনীর চৌধুরী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সদস্য এস এ রশীদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) খুলনা জেলা সমন্বয়ক জনার্দন দত্ত, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ( মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় সদস্য ও খুলনা জেলা সভাপতি মোজাম্মেল হক খান প্রমুখ।