রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে দুর্নীতি-লুটপাটকারীদের বিচার দাবি

খালিশপুর ও দৌলতপুর জুট মিলস কারখানা কমিটির উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল। আজ শুক্রবার বিকেলে খুলনা নগরের খালিশপুর বিআইডিসি সড়কে
ছবি: শেখ আল এহসান

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকদের সঠিক হিসাব অনুযায়ী পাওনা পরিশোধ, বন্ধ হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল পুনরায় রাষ্ট্রীয় মালিকানায় চালু ও আধুনিকায়নের দাবিতে খুলনায় শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে খালিশপুর পিপলস গোল চত্বরে ওই সমাবেশের আয়োজন করে খালিশপুর ও দৌলতপুর জুট মিলস কারখানা কমিটি।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, অব্যাহত লোকসান দেখিয়ে পাটকলগুলো বন্ধ করেছে সরকার। প্রকৃত অর্থে পাটকলে লোকসানই যদি হয়ে থাকে, তাহলে ওই লোকসানের জন্য দায়ী কারা? কী কী কারণে লোকসান হয়েছে তার কী কখনো তদন্ত হয়েছে? এযাবৎ লোকসানের কোনো তদন্ত হয়নি। এই লোকসানের জন্য দায়ী স্বাধীনতা–পরবর্তী সরকারের শিল্পবিরোধী নীতি ও মন্ত্রী-আমলা-দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-ব্যবসায়ী-রাজনীতিবিদের সম্মিলিত লুটপাট ও দুর্নীতি। তাই ওই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্তদের বিচারের আওতায় আনা উচিত। এই দুর্নীতি-লুটপাটের জন্য শ্রমিক-কৃষকেরা কোনোভাবেই দায়ী নয়। অথচ শ্রমিকদের ঘাড়ে দুর্নীতির বোঝা চাপিয়ে পাটকলগুলো বন্ধ করা হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, ১৪ মাস আগে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ২৫টি পাটকল ও ৬টি চিনিকল বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। ফলে প্রায় ৬০ হাজার শ্রমিক এবং পাটকল ও চিনিকলসংশ্লিষ্ট প্রায় ৩ কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এসব শ্রমিকের নিজস্ব কোনো বাস্তুভিটা নেই। এ রকম অবস্থায় তাঁরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় পাটকল চালু, আধুনিকায়ন ও সঠিক হিসাব অনুযায়ী শ্রমিকদের বকেয়া প্রদান করার দাবি জানান। ওই দাবি না মানলে ধারাবাহিকভাবে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল পিপলস গোল চত্বর থেকে শুরু হয়ে নতুন রাস্তা পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়।

শ্রমিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কারখানা কমিটির সভাপতি মো. মনির হোসেন। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবীর। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের সদস্যসচিব এস এ রশীদ, বাম গণতান্ত্রিক জোট ও গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা সমন্বয়ক মুনীর চৌধুরী, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্ক্সবাদী) খুলনা জেলা সভাপতি মো. মোজাম্মেল হক খান, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) জেলা নেতা আবদুল করিম প্রমুখ।