রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে দলিলে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ

জমিজমার কাগজপত্রের বিষয়ে কাজ আছে বলে এমন কথা বলে মাহমুদুল হাসান ওরফে রুবেল (৩৭) নামের এক ব্যক্তিকে প্রতারণা করে ভূমি অফিসে নেওয়া হয়। সেখানে জমি বিক্রির দলিলে তাঁর স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সেখান থেকে তিনি পালাতে চেয়েছিলেন। পরে তাঁকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে দলিলে স্বাক্ষর নেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় এমন একটি ঘটনা নিয়ে অভিযোগ করেন মাহমুদুল হাসান। শুক্রবার পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। গত সোমবার প্রতারণার ঘটনাটি ঘটে। মাহমুদুল হাসান উপজেলার বহেরারচালা গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, মাহমুদুল হাসান একদমই সহজ-সরল জীবন যাপন করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী মাহমুদুল হাসানকে জমির কাগজপত্র বিষয়ে কাজ করার কথা বলে শ্রীপুর ভূমি অফিসে নিয়ে যান বহেরারচালা গ্রামের মনিরুজ্জামান, মো. তোফাজ্জল, মো. আজিজুল, সাহাব উদ্দিন ও মাহবুব এ রাব্বানী। সেখানে গিয়ে অস্বাভাবিক আচরণ দেখে মাহমুদুল হাসান কৌশলে পালিয়ে যান। তিনি সড়ক ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাছে পৌঁছালে সেখান থেকে তাঁকে কয়েকজন মিলে ভূমি অফিসের দিকে তুলে নিয়ে যান। ভূমি অফিসের পাশের একটি ঘরে আটকিয়ে তাঁর কাছ থেকে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ জমির দলিলে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। স্বাক্ষর নেওয়ার পর তাঁকে ভয় দেখিয়ে সেখান থেকে দ্রুত চলে যেতে বলেন।

মাহমুদুল হাসানের বড় ভাই মো. কামাল বলেন, তাঁর ভাই প্রতারণার শিকার হয়ে বাড়িতে এসে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। লোকজন দেখতে পেয়ে তাঁকে নিবৃত্ত করেছিলেন। প্রতারণার ঘটনার বিষয়ে তাঁরা সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরকেও জানিয়েছেন।

এসব বিষয়ে অভিযুক্তদের একজন মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, এসব অভিযোগ সত্য নয়। ওই ব্যক্তি স্বেচ্ছায় স্বাক্ষর দিয়েছেন। জমির ক্রেতা আমার আত্মীয় হন। জোরপূর্বক কিছু হয়নি।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে শুক্রবার বিকেলে শ্রীপুরের সাবরেজিস্ট্রার নাজির আহাম্মদের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি তা ধরেননি। এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।

শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন ভুইয়া শুক্রবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে তদন্তে গিয়েছিলাম। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, সরল-সোজা চরিত্রের মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’