রাস্তার পাশে ফের কেনাবেচা

রাস্তার পাশে পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। গতকাল বিকেলে ময়মনসিংহের ভালুকা পৌরসভার পাঁচ রাস্তার মোড়ে।  ছবি: প্রথম আলো
রাস্তার পাশে পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। গতকাল বিকেলে ময়মনসিংহের ভালুকা পৌরসভার পাঁচ রাস্তার মোড়ে। ছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহের ভালুকা পৌরসভার প্রধান সড়কের পাশে আবার পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসছেন দোকানিরা। এতে সড়কের যানজটে সরকারি হাসপাতালের রোগী, কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও পথচারীদের যাতায়াতে আবারও শুরু হয়েছে দুর্ভোগ।

মূল রাস্তার পাশে এভাবে দোকান বসা কয়েক বছর ধরেই চলছে। কিন্তু এ নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে এসব দোকানকে একাধিকবার উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে বারবারই উচ্ছেদের দুই-তিন দিন পর আবার সেখানে দোকান নিয়ে বসে পড়েন ব্যবসায়ীরা।

গত ১৭ অক্টোবর প্রথম আলো ময়মনসিংহ পাতায় ‘রাস্তার পাশে কেনাবেচা, ভোগান্তি’ শিরোনামে এ নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হওয়ার পর কিছুটা টনক নড়ে পৌর কর্তৃপক্ষের। এরপর রাস্তার পাশের এই অস্থায়ী দোকানিদের অন্যত্র সরানোর উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। এর ফলে রাস্তার পাশে দোকান বসা কয়েক দিন বন্ধ থাকে। গত ৭ নভেম্বর পাইলট উচ্চবিদ্যালয় রোডের পাশে একটি নির্মাণাধীন মার্কেটের নিচতলায় ওই দোকানিদের বসার ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন ভালুকা পৌরসভার মেয়র এ কে এম মেজবাহ উদ্দিন। ওই দিনই সন্ধ্যায় দোকানিদের রাস্তার পাশে আর না বসার জন্য মাইকিংও করা হয়। কিন্তু এর চার দিন পরই রহস্যজনক কারণে দোকানিরা আবার সেই রাস্তার পাশেই বসতে শুরু করেন। এ বিষয়ে ব্যবসায়ী ও পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলেও কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি।

গতকাল শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার পাশে দোকানগুলো বসতে শুরু করেছে। কারও কারও পণ্য সাজানোর কাজ শেষ, আবার কেউ কেবল সাজাচ্ছেন। রাস্তার দুই পাশেই শাকসবজি, পেঁয়াজ, রসুন ও বিভিন্ন প্রকার ফলের দোকান দেখা গেল। এর মধ্যেই রাস্তায় থেমে থেমে যানজটও তৈরি হতে শুরু করে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও বাজারের স্থায়ী দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ভালুকা বাসস্ট্যান্ডের চার রাস্তার মোড়ের পশ্চিম দিকের রাস্তার শুরু থেকে পাঁচ রাস্তার মোড়ের রাস্তাগুলোর দুই পাশে অস্থায়ী দোকানিরা বসছেন। এ সময় ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে রাস্তাটি সরু হয়ে পড়ে। ফলে প্রতিদিনই এখানে যানজট লেগে থাকে। অনেক সময় রোগী নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সকে রাস্তায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা যায়।

পাঁচ রাস্তার মোড়ের পশ্চিম-উত্তর দিকে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। পূর্ব পাশেই ভালুকা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে হালিমুন্নেছা চৌধুরানী মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। উত্তর দিকে ভালুকা পাইলট উচ্চবিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই মোড়ের আশপাশেই আরও কয়েকটি প্রাইভেট ক্লিনিক, ব্যাংক ও বিপণিবিতান।

জানতে চাইলে ভালুকা পৌরসভার মেয়র এ কে এম মেজবাহ উদ্দিন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে ওই রাস্তার দোকানিদের বেশ কয়েকবার উচ্ছেদ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তাঁদের বসার জন্য একটি জায়গাও নির্ধারণ করে এর উদ্বোধন হয়েছে। কিন্তু কী কারণে দোকানিরা সেখানে না বসে আবার রাস্তার পাশে বসতে শুরু করলেন, তা আমার জানা নেই। সবার সহযোগিতা ছাড়া পাঁচ রাস্তার মোড়ের দোকানিদের অন্যত্র সরানো সম্ভব নয়।’

এ বিষয়ে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ কামাল বলেন, তিনি ভালুকায় যোগদানের পর অন্তত দশবার ওই দোকানিদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। কিন্তু কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর দোকানিরা আবার বসে পড়েন। তাই এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।